https://www.a1news24.com
৩১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১:৪২

সাভারে ড্যাফোডিল ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় বেসরকারি দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।গতকাল রোববার রাত নয়টার দিকে আশুলিয়ার খাগান এলাকায় বেসরকারি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল সন্ধ্যার পর ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ভাড়া বাসা ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেল’ এর পাশে বসে ছিলেন সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। তাঁদের মধ্য এক শিক্ষার্থী থুতু ফেললে অসর্তকতাবশত সেখান দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে যাওয়া ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীর শরীরে লাগে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। পরে রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী দেশি অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের ওই বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।

এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন। একপর্যায়ে তাঁরা সিটি ইউনিভার্সিটির দিকে অগ্রসর হন। উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন। তাঁরা সিটি ইউনিভার্সিটির প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

এই উত্তেজনার মধ্যে সিটি ইউনিভার্সিটি–সংলগ্ন এলাকায় পৃথক একটি স্থানে সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। পরে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ঢোকেন। তাঁরা ক্যাম্পাসে দাঁড় করিয়ে রাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি বাস, একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেন। এ ছাড়া একটি বাস, দুটি প্রাইভেট কার, একটি মোটরসাইকেল, প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর করা হয়। রাত সাড়ে তিনটার দিকে ড্যাফোডিলের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী সেখান থেকে চলে আসেন। তবে কিছু শিক্ষার্থী সেখানে আটকা পড়েন। পরে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কর্মকর্তারা আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, ‘অসর্তকতাবশতই সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ফেলা থুতু ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীর শরীরে লাগে। সেখানে “সরি” বলার পর বিষয়টি সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু রাতে এসে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের মেসে ভাঙচুরের ঘটনাটি কাম্য নয়। উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধানের।’

সাভার মডেল থানার বিরুলিয়া ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল ওহাব বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতে খাগান এলাকায় ড্যাফোডিল ও সিটি ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। পরে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করি। তবে ঘটনাটি মীমাংসার দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীকে মারধর করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। তবে সংঘর্ষে আরও আহত হয়েছে কিনা তা এখনো জানা যায়নি।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির প্রক্টর শেখ মুহাম্মদ আলিয়ার বলেন, ‘এখনো আমাদের ৯ শিক্ষার্থীকে সিটি ইউনিভার্সিটিতে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধানের। এ ঘটনায় ড্যাফোডিলের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।’

সিটি ইউনিভার্সিটির প্রক্টর অধ্যাপক আবু জায়েদ বলেন, ‘ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, সেটি এখনো আমরা নিশ্চিত নই। ছাত্রদের মারামারি থেকে ক্যাম্পাস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে না। এটি পরিকল্পিত। আমাদের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।’

আরো..