নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকার ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বিভিন্ন পদক্ষেপে বিএনপি হতাশ বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা জানান।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা (ঐকমত্য কমিশনের কাছে) পক্ষপাতমূলক আচরণ আশা করি না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় দেখতে চাই। তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) যেন নিরপেক্ষভাবে আচরণ করে এবং তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ডে যেন জাতি আশ্বস্ত হতে পারে। আমরা ঐকমত্য কমিশনের এবং সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে হতাশা ব্যক্ত করছি।
তিনি বলেন, এতো দিন আমরা মনে করতাম, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রেফারির ভূমিকা পালন করছে। কালকে যে সুপারিশ তারা সরকারের কাছে প্রদান করেছে তার মধ্যে একজন স্বাক্ষরকারী প্রধান উপদেষ্টাও বটে, কমিশনের সভাপতি হিসেবে। সুতরাং সেটা একপক্ষে সরকারেরও একটা এন্ডর্সমেন্ট হয়। কিন্তু রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনার সময় মনে হয়েছে, ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরও দু-তিনটি দল তারা বোধহয় একপক্ষ, আমি বিপক্ষেই খেলছিলাম। সেই হিসেবে জাতির পক্ষেই আমরা দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার কেন জানি মনে হয়েছে, কিছু দলের প্রস্তাব এবং কমিশনের নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা জাতির ওপরে জবরদস্তি করে আরোপিত করা হচ্ছে।
ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনে যেভাবে ঐকমত্যে পৌঁছানো গেছে এবং গত ১৭ অক্টোবর পার্লামেন্টের সাউথ প্লাজায় ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যেটি স্বাক্ষরিত হয়েছে সেই দলিলটা ওখানে নেই। শুধু আছে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সুপারিশ। ঐকমত্য হলো কীভাবে, নোট অব ডিসেন্ট কোথায় কোথায় আছে সেগুলোর কোনোকিছুই সেখানে উল্লেখ নেই।
গণভোট প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ যেভাবে প্রণীত হয়েছে সেই একটি প্রশ্নে গণভোট হতে পারে, একই দিনে হতে পারে। সেই গণভোট কেন একই দিনে হবে সেই যুক্তি আমরা দিয়েছিলাম। যাতে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ে, যেহেতু প্রার্থীরা ভোটারদের নিয়ে আসবে এবং একই দিনে একই খরচে একই আয়োজন হয়ে যাবে ছোট্ট একটা ব্যালটের মাধ্যমে। আমরা তখন সে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। দুই একটি দল বাদে বাকি সবাই সেই প্রস্তাবে একমত ছিল।
তিনি আরও বলেন, যেসব প্রস্তাব ঐকমত্য কমিশন এবং দু-একটি দল দিয়েছিল—গতকালকের সুপারিশের মধ্যে শুধু সেই প্রস্তাবগুলোই আছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যেসব প্রস্তাব দিয়েছে সেখানে শুধু জাতি বিভক্ত হবে, এখানে কোনো ঐকমত্য হবে না। এর ভিত্তিতে তারা কি অর্জন করতে চায় আমরা জানি না।
আরপিও এবং নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে কয়েকটি অধ্যায় যেটা আরপিও-তে এসেছে তাতেও আমরা লক্ষ্য করেছি, উদ্দেশ্যমূলকভাবে নির্বাচন সংস্কার সংক্রান্ত কমিশনের একটি অনালোচিত প্রভিশন সেখানে অন্তর্ভুক্ত করে অর্ডিন্যান্স পাস হয়েছে।
 
						 
			