সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় জেলা বিএনপির সভাপতি ও সিলেট-৩ আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর নেতৃত্বে বিশাল গণসমাবেশ ও গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪ টায় দক্ষিণ সুরমার চন্ডীপুল পয়েন্ট থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচিতে অংশ নেন অন্তত ২০ সহস্রাধিক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ।
মিছিলপূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন এবং চলমান ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকতে বলেছেন। তিনি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, মনোনয়ন পাওয়ার পর কোনো মিছিল বা মিষ্টি বিতরণ করা যাবে না- এতে দলের ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়ে বিএনপির প্রতিশ্রুতি তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি।
আবেগঘন বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, “আমার মাও মৃত্যুর মুখোমুখি ছিলেন, চাইলে তাঁকে নিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু তিনি আসেননি আপনাদের ছেড়ে। ছয়বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন, তবুও দলের কর্মীদের ছেড়ে যাননি।” তার এই বক্তব্যে উপস্থিত নেতারা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।গণসমাবেশে কাইয়ুম চৌধুরী ২০ সহস্রাধিক নেতাকর্মী ধানের শীষের বিজয়ের অঙ্গীকার করান।
জনগণকে ভয় দেখিয়ে বা কৌশলের আশ্রয়ে রাজনীতি করতে চায়— এমন শক্তির বিরুদ্ধে বিএনপি দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তিনি বলেন, “যারা ছলচাতুরীর মাধ্যমে জনগণকে ঠকাতে চায়, তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় আমরা ভেঙে দেবো।”সিলেটবাসী তার ভৌগোলিক গুরুত্বের মতোই মান-মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রেখে বীরোচিত অতীত থেকে সোনালী ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাবে। অঞ্চলভিত্তিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে সিলেট ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াবে। প্রবাসী, ব্যবসায়ী, আলেম ও নারী সমাজসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে কাইয়ুম চৌধুরী বলেন— বিএনপি তাদের পাশে রয়েছে ও থাকবে। প্রবাসীদের ন্যায্য দাবি, ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা ও আলেম সমাজের মর্যাদা রক্ষায় বিএনপি বদ্ধপরিকর। নারীর অধিকার রক্ষা ও দেশ গঠনে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতেও দল সচেষ্ট।
আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী আরও বলেন, “আমি আন্দোলনের মাঠের কর্মী হিসেবে বিশ্বাস করি- যদি দল আমাকে আগামী নির্বাচনে এই অঞ্চল থেকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে, তাহলে সিলেট–৩ আসনের সকল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে আমার পক্ষে কাজ করবেন।”
তিনি বলেন, সকল শ্রেণির মানুষের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিএনপি রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে একটি ন্যায্য ও জনগণনির্ভর রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
চণ্ডীপুল পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে বঙ্গবীর রোড হয়ে ক্বীনব্রিজ মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এই বিশাল মিছিল। বিকেল ৫টায় সিলেট রেলস্টেশন এলাকায় সমাপনী সমাবেশের মধ্য দিয়ে গণমিছিলের পরিসমাপ্তি ঘটে। মিছিলের সম্মুখভাগ যখন রেল স্টেশন রোডে পৌঁছে, তখন শেষভাগ ছিল চণ্ডীপুলে- যা সিলেটের রাজপথে এক ঐতিহাসিক গণজাগরণ সৃষ্টি করে।গণসমাবেশ ও মিছিল শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ায় অংশগ্রহণকারী সকল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি বদরুল ইসলাম জয়দু সভাপতিত্বে এবং জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজরুল ইসলাম তাজুলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা অধ্যক্ষ জিল্লুর রহমান সুয়েব, অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন তরফদার, নুরুল আমিন দুলু, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এড. হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, মামুনুর রশিদ মামুন, আনোয়ার হোসেন মানিক, ওয়াহিদুজ্জামান সুফি চৌধুরী, এড. সাঈদ আহমদ, জেলা বিএনপির সম্পাদকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এড. মোস্তাক আহমদ, আলী আকবর, মাহবুব আলম, সহ সম্পাদকদের মধ্যে অর্জুন ঘোষ, মনিরুল ইসলাম তুরন, আহাদ চৌধুরী শামীম, মহানগরের তোফায়েল আহমেদ, আব্দুস সালাম টিপু, শাহীন আলম জয়, ডা. নাজিম উদ্দিন, সুমেল আহমদ চৌধুরী, সাদিকুর রহমান টিপু, তোফায়েল আহমদ সুহেল, আব্দুল মুমিন ছইল, দক্ষিণ সুরমা থানা বিএনপির আহবায়ক ডাঃ এনামুল হক, মোগলাবাজার থানা বিএনপির আহবায়ক আবুল হাসনাত ও সদস্য সচিব জামাল মেম্বার, ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আফতাব উদ্দিন, আশরাফুল আলম বাহার, জহিরুল ইসলাম তানিম, রুহুল আমিন, আজমল আলী, আব্দুল মালিক মল্লিক, সনজিদ আলী, সাহেদ মেম্বার, মোঃ আব্দুর রব সিদ্দিকী, মাওলানা মোঃ মনির হুসাইন, পাবেল রহমান, আফরোজ মিয়া, ডাঃ আজাদ, আব্দুল গণী তাজেবুর, শেখ সুহেল আহমদ বকুল, আব্দুল মুকতি শরীফ, জয়ফুর রহমান পারভেজ, ময়নুল ইসলাম মঞ্জু, নুরুল ইসলাম, সাদেক আহমদ, আরিফ চৌধুরী, রাসেল আহমেদ, রায়হানুল হক, রিফল আহমদ, গৌছ উদ্দীন প্রমুখ।