কাউখালী(পিরোজপুর)সংবাদদাতা: পিরোজপুরের কাউখালীতে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে আহত মো. আলী (৩০) নামের এক যুবক মারা গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার তাকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আলী উপজেলার শিয়ালকাঠী গ্রামের বান্দাঘাটা এলাকার বাসিন্দা হাকিম হাওলাদারের ছেলে।জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিয়ালকাঠি বান্দাকাটা গ্রামে ডাকাত ডাকাত বলে কিছু লোক চিৎকার করে। পরে স্থানীয়রা ডাকাত সন্দেহে আলীকে আটক করে বেধড়ক মারধর করেন। এরপরে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে তাকে গণপিটুনি দিয়ে আহত করে হাত-পা বেধে ফেলে রেখে দেয়।পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে আলীকে উদ্ধার করে রাত ৯টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় খুমেক হাসপাতালে প্রেরণ করে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বাড়ি থেকে ডেকে এনে আলীকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তার আত্মীয়-স্বজনদের।নিহত যুবকের স্ত্রী সোনিয়া বেগম জানান, নিহতের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার জানান, আলী হোসেন এবং তিনি অধিকাংশ সময় বাড়িতে থাকতেন না। রোববার সকালে তাঁর স্বামী ও ভাই সোলায়মানসহ তারা তিনজন বাড়িতে যান। রাতেই তাদের ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্থানীয় ৫০-৬০ জন লোক তাদের বাড়ির সামনে এসে ‘ডাকাত’ বলে চিৎকার শুরু করে। এ সময় আলী ঘরের বাইরে বের হলে তাকে ধরে ঘরের পাশে একটি সুপারি বাগানে নিয়ে জিআই পাইপ দিয়ে নির্মমভাবে মারধর করা হয় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এ সময় আমি তাদের কাছে আমার স্বামীর প্রান ভিক্ষা চাইলে আমাকে ও আমার ভাইকেও মারধর করে।
তবে স্থানীয়রা বলেন, আলী মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কার্যলাপের সাথে জড়িত ছিল।শিয়ালকাঠি ইউপি চেয়ারম্যান গাজী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘গণপিটুনির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে থানায় ফোন দেই এবং আলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই।’ বিষয়টি নিশ্চিত করে কাউখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সোলায়মান বলেন, আলীকে মারধরের ঘটনায় রোববার রাতে আলীর স্ত্রী সোনিয়া বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছে। এটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।