খেলাধুলা ডেস্ক: ২০১২ সাল থেকে বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন নাজমুল হাসান পাপন। চলতি বছর তিনি ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর ধারণা করা হচ্ছিল, বিসিবি বসের দায়িত্ব থেকে হয়তো সরে আসবেন। তবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তাকে এই পদে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।
রোববার (৩১ মার্চ) অনুষ্ঠিত হয়েছে বিসিবির বার্ষিক সাধারণ সভা। এই সভাতে এমন সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবি। সভায় আরও জানানো হয়েছে, বর্তমানে বিসিবির কোষাগারে অর্থের পরিমাণ ১২শ কোটি টাকা। ২০২১ সালে বিসিবি সভাপতি তার এক বক্তব্যে জানিয়েছিলেন, বিসিবিতে জমা অর্থের পরিমাণ ৯০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত ৩ বছরে আরও ৩০০ কোটি টাকা জমা হয়েছে বিসিবির কোষাগারে।
দুপুর ২টা বাজতেই বিসিবির পরিচালকগণ ধীরে ধীরে উপস্থিত হতে শুরু করেন। সেখানে আগেই উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলা ও ক্লাবের কাউন্সিলরা। প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টার আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে অনুমোদন পেয়েছে বিসিবির গঠনতন্ত্রের দুইটি সংশোধন। চলতি অর্থ বছরের বাজেট ও আঞ্চলিক ক্রিকেট কাঠামোর অনুমোদনও মিলেছে বহুল কাঙ্ক্ষিত এই এজিএমে।
দ্বিতীয় বার্ষিক সাধারণ সভায় চলতি অর্থ বছরের (১ জুলাই ২০২৩-২৪ পর্যন্ত) বাজেট অনুমোদন হয়েছে। আইসিসি, বিপিএল ও বিভিন্ন পৃষ্ঠপোষক খাত থেকে এ অর্থ বছরে বোর্ডের সম্ভাব্য আয় ধরা হয়েছে ৪৪৬ কোটি টাকা এবং ব্যয় ধরা হয়েছে ৪০৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে উদ্ধৃত অর্থ ধরা হয়েছে ৩৯ কোটি টাকা। এছাড়া সভায় আবারও নিজস্ব টেলিভিশন চ্যানেল খোলার ঘোষণা দিয়েছে বিসিবি। যার নাম হবে বিসিবি টিভি।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি টিভি পরিচালনার উদ্দেশ্য ও ধরন ব্যাখ্যা করে বিসিবি সভাপতি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলাদেশে সাধারণত দুইটি টিভি আমাদের খেলাগুলো দেখায়। এখন তারা যে সমস্ত খেলা দেখাবে না সেগুলো আমরা দেখাব নিজেদের টিভিতে। আমরা চেষ্টা করব, মূল দলের খেলার পাশাপাশি বাকি খেলাগুলোও দেখানোর। আমরা চাই ঘরোয়া ক্রিকেট টিভিতে দেখাতে। এটি সম্ভব হলে ঘরোয়া ক্রিকেটের মান আরও বাড়বে এবং আম্পায়ারিং নিয়ে কোনো সমস্যা হলে সেটিও ধরা পড়বে।’
সভায় গুরুত্বপূর্ণ আরও একটি সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। ব্যবসা কার্যক্রমে অংশ নিতে গঠনতন্ত্রে দুটি সংশোধনী আনছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। অনুচ্ছেদ ৬-এর উপানুচ্ছেদ ৬.১৭ ও ৬.২০-তে পরিবর্তন আনছে সংস্থাটি।
৬.১৭ উপানুচ্ছেদের সংশোধনীটা হলো এমন- গৃহীত কার্যক্রম বাস্তবায়নে অর্থায়নের জন্য সরকার, পৃষ্ঠপোষক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অন্যান্য উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহ এবং উদ্বৃত্ত তহবিল ঝুঁকিহীন লাভজনক বিনিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণসহ যে কোনো তফসিলি ব্যাংকে যে কোনো পরিমাণে এফডিআর করা এবং ট্রেজারি বন্ড ক্রয় করা।
৬.২০- এর সংশোধনীতে বলা হয়েছে, সারা দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে অবকাঠামো, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সামাজিক সুবিধা বৃদ্ধিসহ আনুষঙ্গিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনে এক বা একাধিক ট্রাস্ট, কোম্পানি, সোসাইটি/ফাউন্ডেশন গঠন। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিসিবির পক্ষে যে কোনো শেয়ার বোর্ডের পরিচালনা পরিষদের অনুমোদন সাপেক্ষে পদাধিকারবলে বোর্ড সভাপতি, পরিচালক, এবং নির্বাহী কর্মকর্তা- এর অনুকূলে বরাদ্দকরণ। পরিবর্তনের জন্য প্রস্তাব দুটি ইতোমধ্যে গৃহীত হয়েছে। এখন কেবল পাশ হওয়ার অপেক্ষা।