স্পোর্টস ডেস্ক: বাংলাদেশের ফুটবলে যেন নতুন ভোরের সূচনা। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরীর অভিষেকের পর জাতীয় দলের চারপাশে তৈরি হয়েছে এক ভিন্ন আবহ।
সেই সুবাতাসে এবার যুক্ত হচ্ছেন আরেক প্রবাসী ফুটবলার সামিত সোম। ইতোমধ্যে ফিফা এবং এএফসির সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে বাংলাদেশের হয়ে খেলার ছাড়পত্রও পেয়েছেন তিনি। আগামী ১০ জুন ঘরের মাঠে হতে পারে তার বহু প্রতীক্ষিত অভিষেক।
হামজার মতো সামিতের আগমন নিয়েও আশায় বুক বেঁধেছেন দেশের সাবেক ও বর্তমান ফুটবলাররা। জাতীয় দলের খেলোয়াড় থেকে শুরু করে কোচ ও সাবেক তারকারা সকলেই দেখছেন ইতিবাচক সম্ভাবনার দিক।
“তারা আর বিদেশি নয়, তারাও আমাদের”—আল আমিন
পুলিশ এফসির স্ট্রাইকার আল আমিন, যিনি প্রিমিয়ার লিগের প্রথম লেগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে ভারতের বিপক্ষে দলে ডাক পেয়েছিলেন, হামজার অভিজ্ঞতা থেকে মুগ্ধ। তার মতে, “হামজা ভাইয়ের সঙ্গে অনুশীলন করাটা আমার জন্য বড় পাওয়া। এখন সামিত ভাই আসছেন, আরও অনেকে আসবেন শুনছি। ওনারা বিদেশি নন, তারাও বাংলাদেশি। আশা করি একদিন বিশ্বকাপে খেলতে পারব। ”
“সামিতদের আগমন লোকাল খেলোয়াড়দের জন্য সুযোগ”—মামুনুল ইসলাম
সাবেক অধিনায়ক ও জাতীয় দলের পোস্টারবয় মামুনুল ইসলাম মনে করেন, প্রবাসী খেলোয়াড়দের আগমন দলকে শুধু শক্তিশালীই করছে না, বরং স্থানীয় খেলোয়াড়দের উন্নতির সুযোগও তৈরি করছে। তিনি বলেন, “তারা ইউরোপে খেলে এসেছে, ওদের সঙ্গে খেললে আমাদের মানও বাড়বে। ভারত ম্যাচে হামজার উপস্থিতিই দলের মোরাল পাল্টে দিয়েছে। সামিতের মতো খেলোয়াড় এলে লাভবান হবে পুরো দল। ”
“জাতীয় দলে প্রতিযোগিতা বাড়াবে”—কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক
জাতীয় দলের সাবেক কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, “প্রবাসী ফুটবলাররা আসছে এটা খুবই ইতিবাচক। এতে দল গঠনে বৈচিত্র্য আসবে এবং প্রতিযোগিতা বাড়বে। আমাদের অনেক খেলোয়াড় এখনও আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছাতে পারেনি, তাই মানসম্মত প্রবাসীদের আগমন দলের ভারসাম্য বাড়াবে। ”
“আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছানোর সুযোগ”—চুন্নুর আশা
সাবেক ফুটবলার ও সংগঠক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু সামিতের আগমনকে দেখছেন সম্ভাবনার দ্বার হিসেবে। তিনি বলেন, “আমি সামিতের ভিডিও দেখেছি, তার আগমন আমাদের জন্য বড় পাওয়া। আরও যদি কাভান বা কুইন সুলিভানদের মতো খেলোয়াড়দের আনতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ ফুটবল আন্তর্জাতিক সুনাম অর্জন করবে। লোকাল ফুটবলেও উন্নতির ঢেউ আসবে। ”
হামজার আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে জাতীয় দলে যে নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল, সামিত সোম সেই ধারাকে আরও এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি। খেলোয়াড়দের কণ্ঠে উচ্চারিত আশাবাদ, সাবেকদের অভিমত এবং কোচদের বিশ্লেষণ মিলিয়ে বলা যায়—বাংলাদেশ ফুটবলের সামনে এক নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে। এখন দেখার বিষয়, মাঠে সেই স্বপ্নের কতটা প্রতিফলন ঘটে।