সিলেট নগরীতে পৃথক ৩টি রেষ্টেুরেন্টে হামলা ও ভাঙচুর করেছে দুবৃত্তরা। হামলায় রেষ্টুরেন্টগুলোর মালিক সহ অন্তত ১০জন আহত হয়েছেন। বুধবার (১ মে) সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন স্থানে এসব হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
সিলেট জেলা ও দক্ষিণ সুরমা রেস্তোরা মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ এসব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
জানা যায়, বুধবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমার বাইপাস রোডে সাউথ সুরমা সিএনজি পাম্পের পাশে শাহজালাল রেষ্টুরেন্টে হামলা চালায় ২৫ থেকে ৩০ জনের একদল যুবক। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা রেষ্টুরেন্টের টেবিলের উপরের কাচের গ্লাসসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।
শাহজালাল রেষ্টুরেন্টের মালিক রুহেল মিয়া জানান- রেষ্টুরেন্টের সকল শ্রমিকদের তিনি মে দিবেসের প্রোগ্রামে যেতে বলে আজকের জন্য তার আত্মীয়দের মধ্য থেকে কয়েকজনকে এনে রেষ্টুরেন্ট খোলেছেন। সকালে রেষ্টুরেন্ট খোলামাত্রই শ্রমিক নামদারী দুবৃত্তরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। এতে করে তার প্রায় দুই লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
একই দিন দুপুর দুইটার দিকে সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমার কদমতলী পয়েন্টে নিউ পঞ্চখানা রেষ্টুরেন্টে হামলা চালিয়েছে ১০ থেকে ১৫ জনের একদল যুবক। রেষ্টুরেন্টে প্রবেশ করেই তারা গ্লাস ভাঙচুর করার পাশাপাশি রেষ্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মালিক, তার ভাই ফারুক আহমদ ও ফরহাদ আহমদ নামের একজনকে মেরে আহত করেছে।
এসময় তারা রেষ্টুরেন্টের ক্যাশ বাক্সে রাখা প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা লোটপাট করে নিয়ে যায়।
দক্ষিণ সুরমা রেস্তোরা মালিক সমিতির অর্থ সম্পাদক ও নিউ পঞ্চখানা রেষ্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মালিক জানান- ‘হঠাৎ করে ১০ থেকে ১৫ জনের একদল যুবক ভাঙচুর করতে করতে রেষ্টুরেন্টে প্রবেশ করে। এসময় আমি ক্যাসে বসা ছিলাম, আমাকে মেরে রক্তাক্ত করে তারা ক্যাশ বাক্সে রাখা প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা লোটপাট করে নিয়ে যায়। আমাকে রক্ষা করতে ভাই ফারুক আহমদ ও ফরহাদ এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মেরে আহত করে যুবকরা।
এবিষয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়াদৌস হাসান বলেন, হামলাকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এছাড়াও দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে ধোপাদীঘির পাড় দিল্লি রেষ্টুরেন্টের পাশে ছোট্ট একটি রেষ্টুরেন্টে কয়েকজন যুবক হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে, সিলেট জেলা রেস্তোরা মালিক সমিতি ও দক্ষিণ সুরমা রেস্তোরা মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ এসব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে সহমর্মিতা জানানোর পাশাপাশি ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- মে দিবস উপলক্ষ্যে সকল রেস্তোরা শ্রমিকদের সব ধরণের সুযোগ সুবিধা দিয়ে মালিকপক্ষ নিজেদের লোক দিয়ে ঘুটি কয়েক রেস্তোরা খোলা রেখেছেন। এর মধ্যেও শ্রমিক নামধারী কতিপয় সন্ত্রাসীরা রেস্তোরাগুলোতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লোটপাট করছে, যা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
নেতৃবৃন্দ এসব সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানান।
পরিদর্শনকালে, সিলেট জেলা রেস্তোরা মালিক সমিতির আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট অরুপ শ্যাম বাপ্পি, সিলেট জেলা রেস্তোরা মালিক সমিতির সভাপতি খালেদ আহমদ, সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান সিদ্দিকী মুক্তা, কোষাধ্যক্ষ আমিনুর রহমান রফিক, সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল ইসলাম, সদস্য সাজু আহমদ, শামীম আহমদ, আজয় সাহা, ও দক্ষিণ সুরমা রেস্তোরা মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুস সাত্তার, সহ সভাপতি তোফায়েল আহমদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ প্রমুখ।