https://www.a1news24.com
১৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১:১৯

সিলেটে কেয়ার ভিসায় জালিয়াতি, মামলা করলেন ভোক্তভোগীর পিতা

প্রায় এক বছর আগে ২৯ লাখ টাকা খরচ করে কেয়ার ভিসায় ছেলেকে লন্ডনে পাঠিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মৌলভী আবুল কালাম দুলাল আহমদ ওরফে সিলেটের দুলাল। ২৪ বছর বয়সী  আবু তাহের তানভীর আহমদকে ভিনটেজ ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে কেয়ার ভিসায় লন্ডনে পাঠানোর পর চাকরি দেয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয়নি। কোম্পানীর প্রতারণার কারনে লন্ডনে গিয়ে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এ বিষয়ে সিলেটের মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে গত ২২শে জুন তিন জনকে আসামি করে মামলা করেন মৌলভী আবুল কালাম দুলাল আহমদ। মামলার ভিনটেজ ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃপক্ষ ও ছাতকের বাগবাড়ি এলাকার ইনাম আহমদ চৌধুরী, বড়লেখার চান্দগ্রামের মিলন আহমদ ও কাজী লায়েক আহমদকে আসামী করা হয়।

সোনারপাড়া নবারুন-১৪০ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মৌলভী আবুল কালাম দুলাল আহমদ মামলায় উল্লেখ করেন- সোনারপাড়াস্থ ভিনটেজ ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে লন্ডনে কেয়ার ভিসার লোক পাঠানো হয় প্রচার হওয়ার পর তার ছেলে তানভীরসহ তারা ইনামসহ আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তানভীরকে লন্ডনে পাঠানোর কথাবার্তা চূড়ান্ত হওয়ার পর আসামিদের সঙ্গে তাদের চুক্তিও হয়। পরে চুক্তিমতো তিনি ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে ২০২৩ সালের ২৩শে মে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন। কেয়ার ভিসা ইস্যু হওয়ার পর ওই বছরের ২৮শে আগস্ট ভিনটেজ ইন্টারন্যাশনালে ২৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এ সময় আসামিরা কোনো প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হবে না বলে আশ্বস্ত করেন। এ ছাড়া তার ছেলেকে লন্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাস করার সুযোগ করে দেবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন। তার ছেলে তানভীর লন্ডনে পৌঁছার পর প্রতিষ্ঠানের কথিত কোনো প্রতিনিধি তানভীরকে রিসিভ করেননি। এমনকি কাজেরও কোনো ব্যবস্থা করেননি। খাওয়া-ধাওয়া সমস্যা হওয়ায় তার ছেলে লন্ডনে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আসামিরা সংঘবদ্ধ চক্র হিসেবে একই অভিপ্রায়ে তার ছেলেকে উন্নত ভিসা প্রদানের নামে মানব পাচারের মতো অপরাধ সংঘটিত করেছে।

এজাহারে দুলাল জানান- এ ঘটনার পর পরবর্তীতে আসামিরা নতুন করে আরও ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। নতুবা তার ছেলেকে মানব পাচার চক্রের কাছে হস্তান্তর করে দেবেন বলে হুমকিও দিয়েছেন। তার ছেলের লন্ডনে থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। যেখানে পৌঁছার পর আসামিদের পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। এ কারণে তার ছেলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এই অবস্থায় গত ১০ই সেপ্টেম্বর নগরের জিন্দাবাজারের মারজান শপিং সেন্টারের তৃতীয় তলার এডুএক্সেস প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বিচারপ্রার্থী হলে আসামি মিলন ও লায়েক তাকে হুমকি দিয়ে বলেন; ভাড়াটিয়া কিলার দিয়ে হত্যা করে ফেলবেন।

মৌলভী আবুল কালাম দুলাল আহমদ জানান- এ ব্যাপারে সিলেটের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একাধিকবার দালালদের সঙ্গে বৈঠকে বসলে তারা নানা টালবাহানা করতে থাকে। ন্যায় বিচারের আশায় তিনি মামলা করেছেন। মামলাটি বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই তদন্ত করছে। তিনি দ্রুত মানবপাচারকারীদের গ্রেফতার করে ন্যায় বিচারের জোর দাবি জানান।

এদিকে মামলার প্রধান আসামি ইনাম আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, তারা কোনো প্রতারণা করেননি। তানভীর লন্ডনের যাওয়ার পর তাদের টাকায় তিন দিনের ট্রেনিং করিয়েছেন। পরে কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও তিনি যোগাযোগ রাখেননি। এজন্য কোম্পানী দায়ী নয় বলে জানান তিনি।

আরো..