https://www.a1news24.com
১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৩:১৬

সমস্যা সমাধানে আমি সময় নষ্ট করিনি, সঙ্গে সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান কথা বলেছি: বাফুফের সভাপতি

ক্রীড়া ডেস্ক: জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের নেতৃতে ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের অধীনে অনুশীলন না করার সিদ্ধান্তে অনড় অবস্থানে রয়েছেন ১৮ ফুটবলার। কোচ খেলোয়াড় দ্বন্দ্বে গঠিত বাফুফের বিশেষ কমিটি বৃহস্পতিবার রাতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছেন বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়াল।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টার পর বাফুফে ভবনে গিয়ে তিনি নিজে খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলেছেন। ‘সমস্যা সমাধানে আমি সময় নষ্ট করিনি, সঙ্গে সঙ্গে কথা বলেছি। ওয়ান টু ওয়ান কথা বলেছি, বললেন বাফুফে সভাপতি। নারী ফুটবলাররা কী চান? তাবিথ বলেন, ‘আমি খেলোয়াড়দের রেসপেক্ট করি, তারা কিছু একটা আদায় করতে চাচ্ছেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এটা তো এই প্রক্রিয়াতে হবে না। এ রকম হলে ফেডারেশন ফেডারেশনের মতো করে কাজ করবে। খেলোয়াড়দেরকে ডিসাইড করতে হবে তারা আসলে কী চান।’

খেলোয়াড়রা বলেছেন, পিটার থাকলে খেলবেন না-তাবিথ বলেন, ‘আমি এখানে লিডার, কোনো পক্ষ না। আমি অভিভাবক। আমার কাজ হচ্ছে বোঝানো, পারলে বা দরকার পড়লে খেলোয়াড়দেরকে ইনসেনটিভ দেওয়া। এর বাইরে তো কিছু করতে পারি না। খেলা না খেলা, এটা তাদের ব্যক্তিগত পছন্দ। ফেডারেশন থেকে তো কাউকে বলা হচ্ছে না তোমরা খেলো, কিংবা খেলো না। চিন্তা করার ব্যক্তি স্বাধীনতা আছে। কিন্তু সিস্টেমের বাইরে, ফ্রেম ওয়ার্কের বাইরে কিন্তু করতে পারব না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আমাকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় মধ্যে থাকতে হবে।’

সাবিনাদের দাবি ছিল-তারা পিটার বাটলারকে চান না। বাফুফে জেনেশুনে কেন এই কোচকে দুই বছরের জন্য চুক্তি করল? এমন প্রশ্নে বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক এটা, কেউ বাফুফেকে এ প্রশ্ন করতে পারে না। কোচের চুক্তির ব্যাপারে বাফুফে অনেক কিছু আমলে নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন একটা পক্ষ বা একটা ব্যক্তি বলতে পারে না যে ঐ একটা ইস্য ধরে চুক্তি হবে কি হবে না। চুক্তির আগে সব ইস্যু সব অভিযোগ বিবেচনা করা হয়েছিল। কার এর যুক্তি ঠিক, আর কার অভিযোগ অযৌক্তিক। আমি মনে করি, এটাতে কাউকে ছোট করা হবে, কাউকে আক্রমণ করা হবে। আমি সে তর্কে যেতে চাই না। অভিযোগ পালটা অভিযোগ এসেছে। সবকিছু বিবেচনায় ছিল। আমাদের আলটিমেট টার্গেট হচ্ছে সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে এশিয়ায় নেক্সট লেভেলে যেতে চাই আমরা।’

তাবিথ তার পরিকল্পনার কথা শোনালেন- এভাবে আমরা দুই বার সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি এখানে পড়ে থাকলে তো হবে না। আমি এশিয়ান লেভেলে যেতে চাই। সামনে আমাদের সেই সুযোগ রয়েছে। শুধু এশিয়ান লেভেলে গেলে তো হবে না আমি চাই ওখানেই থাকতে। এক ম্যাচ খেলে চলে আসলাম, এটা আমার চাওয়া না। আরও পরিষ্কার করে যদি বলি আমাদের কমিটমেন্ট হচ্ছে এশিয়ায় পরবর্তী লেভেলে যাওয়া, একবার উঠতে পারলে সেই লেভেলে থাকতে চাই, নিয়মিত খেলতে চাই। সে চিন্তা মাথায় রেখে আমাকে দল নিয়ে কাজ করতে হবে। সব সময় বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল এশিয়ান লেভেলে খেলবে সেটাই আমার আমাদের চাওয়া।’

এর জন্য কী করতে হবে? তাবিথ বলেন, ‘দলের প্রস্তুতির জন্য যত রকম সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে পারি করবো।’ যারা আন্দোলন করছে তারা কি এখন ছুটি পাবে? তাবিথ বলেন, ‘আমি কাউকে ক্যাম্প ছেড়ে চলে যেতে বলিনি, যারা খেলতে চায় খেলবে। যারা খেলতে চায় না তাদের ব্যাপারে পরে একটা সিদ্ধান্ত অবশ্যই হবে। আমাদের ওপেন ডোর পলিসি। যারা খেলবে ট্রেনিং করবে, তাদেরকে ওয়েলকাম আর যারা খেলবে না, ট্রেনিং করবে না। তাদের সিদ্ধান্তকেও ওয়েলকাম জানাই। এই জায়গা পর্যন্ত আমরা ঠিক আছি। পরে যদি আমরা গুনি, কেউ কাউকে না খেলার জন্য প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে, সেটাও কিন্তু আরেক ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা।’

নারী ক্যাম্পের ভেতরে নিজেদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক দল অনুশীলন করছে, আরেক দল অনুশীলন করছে না। যারা করছে না তাদের মধ্যেও নাকি বড় ধরনের বিভেদ পেয়েছেন বাফুফে সভাপতি। তিনি জানিয়েছেন, সাফে খেলেন এমন ফুটবলার অনুশীলনে রয়েছেন। আর যারা অনুশীলনে নেই এবং অনুশীলন করছেন না অন্যকেও অনুশীলনে বাধা দিচ্ছেন। কিন্তু সেই ফুটবলার ভয়ে প্রকাশ করতে পারছেন না-এ বিষয়টা দেখার জন্য বাফুফে কি করছে? তাবিথ বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে একটা প্রাইভেট ইনডিপেন্ডডেন্ট কমপ্লেইন এবং ক্রিটিসিজম সেল খুলেছি। ক্যাম্পের মধ্যে সমস্যা হলে কেউ যদি অভিযোগ করতে চায় তাহলে করতে পারবে। তবে তাকে নাম দিয়ে অভিযোগ করতে হবে, বেনামে দেওয়া যাবে না। যাকে সে বিশ্বাসযোগ্য মনে করবে, তাকে বলবে। তারপর আমরা দেখব। অভিযোগকারীর নাম কেউ জানবে না।’

আরো..