নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনালে লঞ্চের রশি ছিঁড়ে পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত দুই লঞ্চের রুট পারমিট বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এছাড়া দুই লঞ্চের পাঁচ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক জয়নাল আবেদীন জানান, এমভি ফারহান-৬ ও এমভি তাসরিফ-৪ নামের দুটি লঞ্চের রুট পারমিট তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বিআইডব্লিউটিএ এর পরিচালক রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ ঘটনার পর ফারহান–৬ এর মাস্টার ১ ও ২ এবং ম্যানেজার আর তাসরিফ–৪ লঞ্চের মাস্টার ১ ও ২ কে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটার দিকে সদরঘাট লঞ্চঘাটের ১১ নম্বর পল্টুনের সামনে এই দুর্ঘটনা হয়। এতে একই পরিবারের তিনজনসহ পাঁচজন মারা যান।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, এমভি তাশরিফ–৪ ও এমভি পূবালী–১ নামের দুটি লঞ্চ রশি দিয়ে পন্টুনে বাঁধা ছিল। লঞ্চ দুটির মাঝখান দিয়ে ফারহান নামের আরেকটি লঞ্চ ঢুকানোর সময় এমভি তাসরিফ–৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে গেলে লঞ্চে ওঠার সময় পাঁচজন যাত্রী গুরুতর আহত হয়। পরে আহতদের ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সে করে মিটফোর্ড হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতরা হলেন, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার মাটিচোরা গ্রামের মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে বিল্লাল (২৫), তার স্ত্রী মুক্তা (২৬), তাদের মেয়ে মাইশা (৩); পটুয়াখালী সদরের জয়নাল আবেদিনের ছেলে রিপন হাওলাদার (৩৮) এবং ঠাকুরগাঁও সদরের নিশ্চিতপুর এলাকার আব্দুল্লাহ কাফীর ছেলে রবিউল (১৯)।
এদিকে সদরঘাটে লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে যাত্রীদের হতাহতের ঘটনায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী এক শোকবার্তায় নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।