বিনোদন ডেস্ক: সংগীতজগতের আলোকিত নাম এলিটা করিম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা একতাবদ্ধ হয়ে যে সাহস নিয়ে এগিয়েছেন, এটি তাকে খুবই অনুপ্রাণিত করেছে বলে জানান তিনি। একটি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে আবার এ গায়িকা মন খারাপ করেও বলেন, সোমবার বিজয় উদ্যাপনের মুহূর্তে গণভবন থেকে অনেকেই লুটপাট করছিলেন। সেসব ঘটনা তাকে মর্মাহত করেছে। এসব কাজ শিক্ষার্থীদের নয় বলে জানান এলিটা করিম।
তিনি বলেন, একটা সময় ছিল, আমরা ভাবতাম— এখন মারধর করা হলো, এখন সবাই চুপচাপ হয়ে যাবেন। আগে তো এমন পরিস্থিতিই ছিল। এবারও যখন শিক্ষার্থীদের ওপর প্রথম হামলা হয়, তখন অনেকটা আতঙ্কে ছিলাম। কিন্তু এবার তাদের সাহস দেখতে পেলাম পদে পদে। হাসিমুখে তিনি বলেন, রোববার যখন শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ে সফল হলেন, তখন মনে হলো— আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি।’
এলিটা বলেন, ‘জানি, সবার মধ্যেই ক্ষোভ রয়েছে, এটিও বুঝতে পারছি। কিন্তু মনে রাখতে হবে, যারা বিজয় এনে দেন, তাদের স্থান সব সময় অনেক ওপরে থাকে। এখন জাতীয় কোনো সম্পদ পোড়ানো, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙে দেওয়া, এর বাইরে আরও অনেকের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা হচ্ছে শুনলাম। আমাদের সংখ্যালঘুদের ওপর আঘাত আনা হচ্ছে। এসব ঘটনা আমাকে মর্মাহত করেছে।’
শিক্ষার্থীরা যখন আবারও মঙ্গলবার সকাল থেকে মাঠে নামলেন, তাদের সাধুবাদ জানান এ গায়িকা। এলিটা বলেন, ‘সকাল থেকে ভালো লাগছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের দেখলাম সংসদ ভবন পরিষ্কারের দায়িত্ব নিয়েছে। রাস্তায় কোনো ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় সেই দায়িত্ব কোনো কোনো জায়গায় পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। আবার যেগুলো মানুষ গণভবন থেকে নিয়ে গিয়েছিল, সেগুলো কেউ কেউ ফেরত দিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো যে জাতীয় সম্পদ, সেটা বোঝার উপলব্ধি হয়েছে, এটিও ভালো লেগেছে। তিনি বলেন, একজন সংগীতের মানুষ হিসেবে, একটাই প্রত্যাশা— নতুন বাংলাদেশ ভালোর দিকে যাবে।’
এ গায়িকা বলেন, ‘আমার মনে হয় এগুলো সুবিধাবাদী মানুষের কাজ। এটা কোনো শিক্ষার্থীর কাজ হতে পারে না। তারাই আবার সংসদ ভবনে প্রবেশ করে ধূমপান করছিলেন। আবার ৩২ নম্বরের যে বাড়ি, সেটি কিন্তু জাদুঘর। দেশের ঐতিহাসিক একটা জায়গা। সেটি নষ্ট করায় আমি মর্মাহত হয়েছি। কারণ আপনি যা–ই করুন না কেন, যে পক্ষেই থাকুন না কেন, আপনি ইতিহাসকে অস্বীকার করতে পারবেন না, যেটা হয়ে গেছে।’