https://www.a1news24.com
৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৩:০৮

শ্রীপুরে যুবলীগ নেতা কামরুল কে গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: ক্ষমতার অপব্যবহার করে গত ১৬ বছর চাঁদাবাজি, জমি দখল, নিরিহ মানুষকে জুলুম-নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত যুবলীগ নেতা কামরুল হাসান মন্ডলকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি ও নির্যাতিত এলাকাবাসী। শনিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়ন বিএনপির ব্যানারে স্থানীয় বলদীঘাট বাজারে প্রায় পাঁচ শতাধিক নির্যাতিত মানুষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে।

অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা কামরুল হাসান মন্ডল গাজীপুর জেলা যুবলীগের সদস্য এবং স্থানীয় নয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল বাতেনের ছেলে। সে একজন ভূমিদস্যূ এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে কালো টাকার মালিক হয়েছে। গত ৫ আগস্টর হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে সে এলাকা ছেড়ে আতœগোপনে রয়েছে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তাঁর এসব অপকর্মে সহযোগীতা করেছে সাবেক ডিআইজি আসাদুজ্জামান, গাজীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার (এসপি) ও ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ, গাজীপুরের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জিব কুমার, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার সাবেক ওসি এবং বর্তমানে জিএমপির গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার সহকারী কমিশনার আমির হোসেন। তারা নিরিহ মানুষকে জিম্মি করে ভয় দেখিয়ে জমি দখল, চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। নির্যাতিতরা এলাকাবাসী ভূমিদস্যূ কামরুলের বিচার দাবিসহ তার অবৈধ কালো টাকা উৎসের দাবি জানান।

কাওরাইদ ইউনিয়ন ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মো: মমিনের সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে বক্তব্য রাখেন শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ন সম্পাদক আফজাল হোসেন মন্ডল, কাওরাইদ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আফতাব উদ্দিন তোতা, সাবেক যুগ্ন সম্পাদক আসাদুজ্জামান মাসুদ, বলদীঘাট জেএম সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্যাতিত সাবেক প্রধান শিক্ষক সিরাজুল হক মন্ডল, কাওরাইদ ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি রাশেদ মন্ডল, সাজ্জাদ হোসেন শহীদ, পারভেজ কুমার, হাসান আলী পালোয়ান, ছাত্রদল নেতা আব্দুর রউফসহ যুবদল, শ্রমিকদল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীবৃন্দ। কামরুল ইসলাম মন্ডলের নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীরাও তার বিচার দাবি করেন।

সভায় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ওইসব দুর্ণীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের সহায়তায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে কামরুল হাসান মন্ডল জোরপূর্বক নিরীহ মানুষের জমি দখল, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি, জুলুম-নির্যাতনসহ নানা অপকর্ম করেছেন। তার অপকর্মের কারণে গত ১৬ বছর অনেকেই এলাকা ছাড়া ছিলেন। কেউ তার কথার বাহিরে গেলে বিএনপির ট্যাগ লাগিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করতেন। মানববন্ধন শেষে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ও বিএনপি নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল থেকে তারা কামরুল হাসান মন্ডল করে শাস্তির দাবি জানান।

কামরুল হাসান মন্ডলের নির্যাতনের শিকার বলদীঘাট জে এম সরকার উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৩৯ বছর প্রধান শিক্ষক ছিলাম। শিক্ষক হিসেবে ২২ বছর কাঁচের ঘরের মতো বন্দী থেকে কর্মরত ছিলাম। কামরুলের নেতৃত্বে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন সময় নির্যাতনসহ ২০১০ সালে আমাকে জীবননাশের হুমকি দেয়। সে আমার কাছে ৮ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে, নিরুপায় হয়ে তাকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে বাধ্য হই। চাঁদার বাকী টাকা না দিলে অবসরের ১০ মাস পূর্বে ২০২২ সালে বল প্রয়োগ করে আমাকে স্কুল থেকে বের করে দেয়। আমি ৩৯ বছরের চাকরির জীবনে অবসরের টাকা থেকে বঞ্চিত হই। আমি জুলুম-নির্যাতনকারী চাঁদাবাজ কামরুলসহ তার সহযোগীদের বিচার দাবি করছি।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্টের পর থেকে অভিযুক্ত কামরুল হাসান মন্ডল এলাকা ছেড়ে আতœগোপনে রয়েছে।

আরো..