গত ২২ এপ্রিল ২০২৫ সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটারে হচ্ছে বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ১৭তম প্রযোজনা চীনা নাট্যকার লু স্যুনের বিখ্যাত গল্প The wise man, The Fool and The slave অবলম্বনে “ক্রীতদাস কথা’ নাটকের ২য় প্রদর্শনী । অমল রায়ের নাট্যরুপ থেকে নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন শাহীন রহমান।
বিংশ শতাব্দীতে চীনের গুরুত্বপূর্ণ কথাসাহিত্যিক লু স্যুন (১৮৮১-১৯৩৩) এর হাত ধরেই গোড়াপত্তন ঘটেছিলো চীনের আধুনিক সাহিত্যের। তৎকালীন সামন্তীয় সমাজে শ্রেণী বৈষম্য, দমন নিপীড়ন সামাজিক প্রথা ও প্রাচীন সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে তাঁর সাহিত্যকর্ম হয়ে উঠেছিলো শক্তিশালী হাতিয়ার। সমাজের আমূল পরিবর্তনে রাজনৈতিক সংগ্রামের পাশাপাশি বিপ্লবী ধারার সাহিত্য রচনাকে তিনি সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের অংশ মনে করতেন। তাঁর রচিত এমনই একটি ছোটগল্প The wise man, The fool and The slave।
বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গত ৪৬ বছর ধরে বাংলাদেশে গণসাংস্কৃতিক আন্দোলনের এক সংগ্রামী সংগঠন। রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে বরাবরই বিবর্তনের সাহসী কন্ঠস্বর উপস্থিত ছিলো, জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও এই সংগঠন ছিলো অন্যতম অংশীদার। সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সেই পথ ধরে বিবর্তন লু স্যুনের এই ছোট গল্পটিকে মঞ্চনাটক হিসেবে আবির্ভুত করেছে।
পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় রোজগার কিংবা বেঁচে থাকার ভয়ে আমরা ভীত হয়ে থাকি। কতটুকু আলাদা হয়েছে প্রাচীন দাস ব্যবস্থা থেকে সমসাময়িক পুঁজিবাদী ব্যবস্থা? দাসমালিক যেভাবে নিপীড়ন করে দাসেদের শ্রমে ঘামে প্রাসাদ বানাতো, বিলাসবহুল জীবন যাপন করতো। আজও পুঁজিবাদী ব্যবস্থাতেও শ্রমিককে সেই একই নিপীড়নের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আপাতত দৃষ্টিতে মনে হয় দাসেরা যেমন বন্দী ছিলো, পুঁজিবাদী সমাজে শ্রমিকরা সেরকম বন্দী নয়। তারা মুক্ত ও স্বাধীন। আসলেই কি তাই? শ্রমিকরা যারা প্রতিবাদী হয়ে উঠে তারাও কি ভাঙতে পারে এই বন্দীত্ব? এমনই এক শ্রেণী সংগ্রাম ও রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার কাহিনী হাস্যরসের মাধ্যমে উঠে এসেছে এই নাটকে। এই নাটকে অভিনয় করেছেনঃ তানিয়াহ্ মাহমুদা তিন্নি, মফিজুর রহমান লালটু, এস. এম. শুআইব ত্বাসীন, সোহাগ প্রামানিক, মাহফুজ হাসান, বর্ণিল সপ্তর্ষি, সামিরা সাইদ সাকলাইন, গাজী আলাউদ্দীন, মারজিয়া প্রভা, আমিরুন নূজহাত মনীষা এবং রাউফুর রহমান।