নিজস্ব প্রতিবেদক: শর্ট নোটিশে গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরিচ্যুত করা যাবে না এমন নির্দেশনা দিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে সব গণমাধ্যমে চিঠি পাঠানো হবে বলে জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে অফিসিয়ালি একটি নির্দেশনা দেব-আপাতত কোনো গণমাধ্যমকর্মীকে কোনো প্রতিষ্ঠান শর্ট নোটিশে চাকরিচ্যুত করতে পারবে না।কমপক্ষে তিন মাসের নোটিশ দিতে হবে।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের নেতাদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সকাল বেলা চাকরিচ্যুত করার চিঠি ধরিয়ে দেওয়া হলো, এটা হচ্ছে সব ধরনের হিউম্যান রাইটসের ইনিভার্সাল কনভ্শেনের ভায়োলেন্স। এটা আটকানোর জন্য কোনো আইনের দরকার আছে বলে আমি মনে করি না।
তিনি বলেন, আমি মনে করি তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে অফিসিয়ালি একটি নির্দেশনা দেব- আপাতত কোনো গণমাধ্যমকর্মীকে কোনো প্রতিষ্ঠান শর্ট নোটিশে চাকরিচ্যুত করতে পারবে না। কমপক্ষে তিন মাসের নোটিশ দিতে হবে। কোনো গণমাধ্যমকর্মীও যদি মনে করেন তার মালিক পক্ষকে তিন মাসের নোটিশ দেবেন, সেটি দুই মাসও হতে পারে, তা দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে পারি। কিন্তু সিদ্ধান্ত আমরা নিলাম মন চাইলো হুট করে চাকরিচ্যুত করা বা মন চাইলো হুট করে চাকরি ছেড়ে দেন, এটা হতে পারে না। সকল গণমাধ্যমে এই নির্দেশনা অফিসিয়ালি পাঠাব।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ইউটিউব, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে একটি নীতিমালার আওতায় আনা, জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন। এটি সাংবাদিকরা বলেছেন, আপনাদের দাবির সঙ্গে আমি একমত পোষণ করছি। সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে আমরা এ বিষয়ে উদ্যোগ দেন।
তিনি বলেন, আপনারা চাচ্ছেন এখানে অফিস খুলতে হবে। আপনারা সবাই মিলে যখন মানববন্ধন করবেন, তখন বিদেশি মোড়লরা বলবে আমরা সাংবাদিকতার স্পেস সংকোচিত করার জন্য করছি, তখন আপনাদের ভয়েজ রেইজ করতে হবে। এদেশে যদি আমরা সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম ও তথ্যপ্রবাহকে অবাধ করতে পারি শুধুমাত্র মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি এখান থেকে বেনিফিটেড হবে। কারণ মুক্তিযুদ্ধ সত্য। বিকৃত যারা করেছে, অসত্য যারা করে তাদেরকে যখন আটকে দিতে যাবেন তখন উঠে আসে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে আটকে দেওয়ার প্রশ্ন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কে সাংবাদিক হবেন সে ব্যাপারেও একটি নীতিমালা থাকার প্রয়োজন বলে সাংবাদিকরা বলেছেন। আমরা বলবো গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার সরকার এত বেশি উদার নৈতিকতার পরিচয় দিয়েছেন যে গণমাধ্যমে পেশাদারত্বের সঙ্গে সাংবাদিকতা করছেন তাদের বাইরে অনেক অপেশদার লোকজনও সাংবাদিকতায় চলে এসেছে, এখানে নীতি-নৈতিকতা বহির্ভূতভাবে, নিয়ন্ত্রণ তো বাদই দেই, মাশরুমের মতো গজিয়ে গেছে, এটা কিন্তু আপনারাই আমাদের বলছেন, আমরা বরং এখানে উদার, আমরা কাউকে আটকাইনি। এ উদার নৈতিকতার ফলে সাংবাদিকতার জায়গায় প্রফেশনালিজম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে আপনারা বলছেন। আপনাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা এগুলো নিয়েও নীতিমালা তৈরি করব। যেন গণমাধ্যমের পরিবেশের মধ্যে ডিসিপ্লিন আসে।
টিভিতে গ্র্যাচুয়িটি দেওয়ার বিষয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিষ্ঠান লাভজনক না হলে এটি করা কঠিন হয়। আইন বাস্তবায়নের অনুপস্থিতিতে অনেকে যে সুযোগ নেন না এমন না। আইএসপির যারা আছেন তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। ক্লিন ফিড বাদ দিয়ে প্যাকেজ দিতে পারেন না। এ বিষয়ে আমরা সবাইকে নোটিশ দেব, এরপর আইনি ব্যবস্থা নেব। এছাড়া ডিজিটাল করতে সব বডিকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। সবাইকে নিয়ে কো-অর্ডিনেশন সেল করছি। আমরা আমাদের মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিনিধি দেব।