ক্রীড়া ডেস্ক: ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) চলতি আসরে নিজের শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছিল মোস্তাফিজুর রহমান। আসরের শেষ ম্যাচটা ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স ভালো করলেও দলকে জেতাতে পারেননি ফিজ। পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ৭ উইকেটে হারেছে চেন্নাই সুপার কিংস। আগে ব্যাট করতে নেমে রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের ৬২ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬২ রান তুলে চেন্নাই। লক্ষ্য তাড়ায় জনি বেয়ারস্টো ও রাইলি রুশোর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৩ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে পাঞ্জাব।
বুধবার (১ মে) চিপকের এমএ চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে টসে জিতে চেন্নাইকে আগে ব্যাট করতে পাঠান পাঞ্জাব কিংসের অধিনায়ক স্যাম কারান। ব্যাটিং করতে নেমে সাবধানী শুরু করেন আজিঙ্কা রাহানে ও রুতুরাজ। সবশেষ কয়েক ম্যাচে ছন্দে না থাকার পরও রাহানের ওপরই আস্থা রাখে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। পাওয়ারপ্লেতে অবশ্য তারা দু’জনে মিলে কোন উইকেট না হারিয়ে ৫৫ রান তোলে। তবে পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার পরই বিপাকে পড়ে তারা। কারণ প্রত্যাশিত রান তুলতে পারছিলেন না তাদের দু’জনের কেউই।
রান তোলার চাপে শেষ পর্যন্ত নিজের উইকেট দিয়ে আসেন রাহানে। হারপ্রীত ব্রারের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে সুইপ করতে গিয়ে রাইলি রুশোর হাতে ক্যাচ দেন। রাহানের ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ২৯ রান। একই ওভারের পরের বলে ফেরেন শিভাম দুবেও। চেন্নাইয়ের হয়ে ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে থাকা বাঁহাতি এই ব্যাটারকেও লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন হারপ্রীত। চারে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রবীন্দ্র জাদেজাও।
রাহুল চাহারের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে সামনের পায়ের ওপর ভর করে খেলতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তবে বলের লাইন মিস করায় তা আঘাত হানে জাদেজার প্যাডে। আম্পায়ার আউট দেয়ার পরও রুতুরাজের সঙ্গে কথা বলে রিভিউ নেন তিনি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি ৪ বলে ২ রান করা জাদেজার। রাহানের ইমপ্যাক্ট সাব হিসেবে পাঁচে নামেন সামির রিজভী।
দ্রুত তিন উইকেট হারানোর চাপ সামলে দ্রুত রান তুলতে পারেননি তিনিও। কাগিসো রাবাদার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাট করে থার্ডম্যান দিয়ে খেলতে গিয়ে হার্শাল প্যাটেলের হাতে ক্যাচ দেন ২৩ বলে ২১ রান করা সামির। তরুণ এই ব্যাটার ফেরার পর স্যাম কারানের বলে ছক্কা মেরে ৪৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন রুতুরাজ। যদিও ইনিংসের ১৮তম ওভারে ফেরেন ৬২ রানের ইনিংস খেলে। ১৫ রান করা মঈন আলীকে নিজের শিকার বানিয়েছেন চাহার। শেষ দিকে মহেন্দ্র সিং ধোনির ব্যাট থেকে আসে ১৪ রান। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬২ রানের পুঁজি পায় চেন্নাই।
রানতাড়ায় নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় পাঞ্জাব। ১০ বলে ১৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন প্রাভসিমরান সিং। এরপর রাইলি রুশোকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন জনি বেয়ারস্টো। দু’জনের ব্যাটে ভর করে জয়ের পথে এগোতে থাকে পাঞ্জাব। তবে বেয়ারস্টোকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন শিভম দুবে।
তৃতীয় উইকেটে রুশোর সঙ্গে যোগ দেন শশাঙ্ক সিং।। দু’জনে মিলে পাঞ্জাবের সংগ্রহ একশ পাড় করেন। দারুণ খেলতে থাকা রুশোকে নিজের শিকার বানান শার্দুল ঠাকুর। ২৩ বলে ৪৩ রান করে আউট হন রুশো। মোস্তাফিজ নিজের তৃতীয় ওভারে মেইডেন দেন। তার ওভারে কোনো রানই নিতে পারেননি শশাঙ্ক।
শেষ ওভারে ওয়াইডের পসরা নিয়ে হাজির হন মোস্তাফিজ। চারটি ওয়াইড দেন তিনি। নিজের বোলিং কোটা শেষ করেন ২২ রান দিয়ে। পাঞ্জাবকে আর কোনো বিপদ হতে দেননি অধিনায়ক স্যাম কারান ও শশাঙ্ক। দুজনে পাঞ্জাবকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। কারান ২৬ ও শশাঙ্ক ২৫ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন। এই দুই ব্যাটারের ওপর ভর করে সাত উইকেট এবং ১৩ বল হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাঞ্জাব।