নিজস্ব প্রতিবেদক: বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব পদে নিয়োগ পেয়েছেন দেশবরেণ্য ইসলামি আইন বিশেষজ্ঞ ও হাদিস বিশারদ আল্লামা মুফতি আবদুল মালেককে (হাফি.)। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দীকের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
তার জন্ম ২৯ আগস্ট, ১৯৬৯ সালে কুমিল্লায়। তার পিতা শামসুল হক ছিলেন একজন আলেম। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার খেড়িহর কওমি মাদ্রাসা দিয়ে।
পরে তিনি পাকিস্তানের করাচি বিননূরী টাউন জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া থেকে তাকমিল (মাস্টার্স) সমাপ্ত করেন। তারপর সেখানেই শায়খ আব্দুর রশিদ নোমানির তত্ত্বাবধানে তিন বছর হাদিস শাস্ত্রে তাখাসসুস (উচ্চতর গবেষণা) ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর দুবছর দারুল উলুম করাচিতে বর্তমান বিশ্বের ইসলামিক স্কলার মুফতি তকি ওসমানীর তত্ত্বাবধানে ফিকাহ শাস্ত্রে তাখাসসুস (উচ্চতর গবেষণা) ডিগ্রি অর্জন করেন।
তাখাসসুস শেষে সৌদি আরবের রিয়াদে শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহর তত্ত্বাবধানে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত প্রায় আড়াই বছর হাদিসশাস্ত্রসহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার কাজ করেন।
১৯৯৬ সালে ঢাকায় উচ্চতর ইসলামি শিক্ষা ও দাওয়া প্রতিষ্ঠান ‘মারকাজুদ দাওয়াহ আল-ইসলামিয়া’ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তিনি এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাসচিব এবং উলুমুল হাদিস অনুষদের প্রধান। ২০০৫ সাল থেকে মারকাজুদ দাওয়াহ আল-ইসলামিয়ার মুখপত্র মাসিক আল-কাউসারের প্রকাশনা শুরু হয়। সে থেকে এখন পর্যন্ত জনপ্রিয় এ ম্যাগাজিনের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। ২০১২ সালে গঠিত বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশনেরও তিনি একজন সদস্য।
মুফতি আবদুল মালেক দেশ-বিদেশের প্রসিদ্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইসলামিক স্টাডিজ, হাদিস ও ফিকহে ইসলামির ওপর উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনকারী একজন প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার। বিশ্বখ্যাত ইসলামি পণ্ডিত মুফতি বিচারপতি তাকী ওসমানী ( হাফি.) তার ওস্তাদ। আরব বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইসলামি পণ্ডিত ও সৌদি আরবের রিয়াদে অবস্থিত ইমাম মোহাম্মদ ইবনে সাউদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উসুলুদ্দীন অনুষদের অধ্যাপক শায়খ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহর (রহ.) অধীনে তিনি দুবছর হাদীস ও ইসলামি আইন বিষয়ে উচ্চতর গবেষণা পরিচালনা করেন।
তিনি মক্কা, মদিনা, পাকিস্তান, ভারত ও তুরস্ক সফর করেছেন এবং বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। তিনি ইতোমধ্যে বাংলা, আরবি, ইংরেজি ও উর্দু ভাষায় মোট ১৬টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। এছাড়া তার তত্ত্বাবধানে মাসিক আল-কাউসার নামে নিয়মিত একটা গবেষণা পত্রিকা বের হয়।
তার উল্লেখযোগ্য বই: উম্মাহর ঐক্য: পথ ও পন্থা, ঈমান সবার আগে, প্রচলিত ভুল, হাদিস ও সুন্নায় নামাজের পদ্ধতি, তারাবির রাকাত সংখ্যা ও ঈদের নামাজ, তাছাউফ ও তত্ত্ব বিশ্লেষণ, প্রচলিত জাল হাদিস, তালিবুল ইলমের পথ ও পাথেয়, আল-মাদখাল ইলা উলুমিল হাদিসিশ শরিফ (আরবি)।