নিজস্ব প্রতিবেদক: ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটির করপোরেশনসহ মেয়র পদে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু। একইদিন পটুয়াখালী, বরগুনা, মুন্সীগঞ্জ, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে সাধারণ এবং উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তথ্য অনুযায়ী, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে সাধারণ এবং কুমিল্লা সিটিতে মেয়রের শূন্য পদে উপনির্বাচন ছাড়াও তিনটি পৌরসভার সাধারণ ও বিভিন্ন পৌরসভার মেয়রের শূন্য পদসহ নানা ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের শূন্য পদে নির্বাচন হবে।
এছাড়া ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন, ৭টি জেলা পরিষদের উপনির্বাচনসহ ১৮৭টি ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন শূন্য পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচনের ১২৮টি কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনসহ ভোটের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছায়। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মোতায়েন করা হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সাড়ে চার হাজার সদস্য।
ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় এবং কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, সে জন্য ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এদিকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে শুধু কেন্দ্র নয়, পুরো কুমিল্লা শহরই নিরাপত্তার আওতায় আনা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করা হলে কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি রিটার্নিং কর্মকর্তার।
কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, ভোটের মাঠে প্রভাব বিস্তারের কোনো সুযোগ দেয়া হবে না। কোনো অনিয়মের চেষ্টা চালানো হলে ভোটকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, এসব নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে ইমেজ সংকটে পড়তে না হয় সেজন্য সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছেন সিইসিসহ অন্য কমিশনাররা। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের ব্যাপারে তারা বদ্ধপরিকর।
কুমিল্লা সিটির ২৭টি ওয়ার্ডে পুলিশ, এপিবিএন ও আনসারের ২৭টি, ৯টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ও দুটি রিজার্ভ টিম থাকবে। এছাড়া নিয়োজিত থাকবে র্যাবের ২৭টি টিম এবং ১২ প্লাটুন বিজিবি। এ ছাড়া সর্বোচ্চ ২২ জনের ফোর্স অন্য স্থানীয় নির্বাচনের কেন্দ্রে মোতায়েন থাকবে।
নির্বাচন উপলক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে একটি আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতি কেন্দ্রে নিয়োজিত থাকবে ১৭ জনের ফোর্স। এ ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জন এবং সাধারণ কেন্দ্রে নিয়োজিত থাকবেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৬ সদস্য।
ময়মনসিংহ সিটিতে ১২৮টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়াও ভোটের এলাকায় নিয়োজিত থাকছে পুলিশ, এপিবিএন, আনসারের ৩৩টি মোবাইল টিম, ১১টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ও একটি রিজার্ভ টিম। ৩৩টি ওয়ার্ডে থাকছে র্যাবের ১৭টি টিম ও বিজিবি থাকবে ৭ প্লাটুন।
এই সিটি নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাদেকুল হক খান (টজু), জাতীয় পার্টির প্রার্থী শহীদুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য কৃষিবিদ রেজাউল হক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অবশ্য বর্তমান মেয়র ইকরামুল হক টিটু স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছেন।
অন্যদিকে কুমিল্লা সিটির ২৭টি ওয়ার্ডে পুলিশ, এপিবিএন ও আনসারের ২৭টি, ৯টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ও ২টি রিজার্ভ টিম থাকছে। এছাড়া নিয়োজিত থাকছে র্যাবের ২৭টি টিম ও বিজিবি ১২ প্লাটুন।
এই সিটি নির্বাচনে চার স্বতন্ত্র প্রার্থী- তাহসীন বাহার, নূর-উর রহমান মাহমুদ তানিম, মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন ও মো. মুনিরুল হক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এতে দুই লাখ ৪২ হাজার ৪৫৮ জন ভোটার ১০৫টি কেন্দ্রে ভোট দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ এক লাখ ১৮ হাজার ১৮২ জন, নারী এক লাখ ২৪ হাজার ২৭৪ জন ও হিজড়া দু’জন।