অনলাইন ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ঐতিহ্যগতভাবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকানদের ভোট পেয়ে থাকে ডেমোক্রেটিক পার্টি। তবে এবার সেই ভোট ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের ঝুলিতে পুরোপুরি যাচ্ছে না বলে জরিপে দেখা গেছে। অথচ কমলা হ্যারিস নিজেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত। কেন কমলার প্রতি ভারতীয় ভোটারদের সমর্থন কম, সে বিষয়টি জরিপে উঠে এসেছে।
কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইতিহাস গড়বেন। তিনি প্রথম নারী এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রেসিডেন্ট হবেন। দেশের মধ্যে ট্রাম্পের সঙ্গে জনপ্রিয়তায় সমানে সমান হলেও ইউরোপে হ্যারিসের জনপ্রিয়তা বেশি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে, কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের জরিপে দেখা গেছে, ২০২০ সালে জো বাইডেন যে পরিমাণ ভোট পেয়েছিলেন এবার তার চেয়ে কম ভোট পাবেন কমলা হ্যারিস। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভোটারদের মধ্যে ৬১ ভাগ কমলাকে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে কম নয়। ৫২ লাখের বেশি তারা। মেক্সিকো বংশোদ্ভূত মার্কিনির পরই তারাই সবচেয়ে বেশি। তাদেরই একজন অর্জুন শেটি। পেশায় আইনজীবী এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত বলেন, ‘একজন সন্তান নেবেন কি না সেই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নারীরা যেমন সচেতন, তেমনি দক্ষিণ এশীয় নারীরাও সচেতন। তাই নারীদের সমর্থন কমলা হ্যারিস পাচ্ছেন। তবে ছেলেদের ক্ষেত্রে পার্থক্য তৈরি হচ্ছে ভিন্ন জায়গায়। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানরত দক্ষিণ এশীয় পুরুষেরা চান, সীমান্ত নীতি আরও কঠোর হোক এবং কর বিষয়ক বিভিন্ন বিধিও সংশোধন হোক। আর এটা ট্রাম্পের নীতির সঙ্গে যায়।’
কমলাকে বেছে না নেওয়ার আরেকটি কারণ হলো তাকে আফ্রিকান আমেরিকান হিসেবে বিবেচনা করা। তিনিও নিজেকে এই হিসেবেই তুলে ধরেছেন। ফলে ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা তাকে ততটা আপন ভাবতে পারছেন না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এ প্রসঙ্গে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ার ফেলো রোহিত চোপরা বলেন, ‘কৌশলগত কারণেই কমলা এটা করেননি। এটা তার জন্য লাভজনকও বটে। কারণ আফ্রিকান আমেরিকান কমিউনিটি বড়।’
ভারতীয়দের সমর্থন টানতে চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। এরই মধ্যে তিনি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে হিন্দুদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দিওয়ালি উপলক্ষেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।
এসব কারণে কমলার চেয়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের মধ্যে এগিয়ে ট্রাম্প। এর বাইরে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো গাজা যুদ্ধ। অনেকেই এই যুদ্ধের হতাহতের জন্য জো বাইডেন প্রশাসনকে দায়ী করেছে। আর এই প্রশাসনের অংশ কমলা। তাই ভারতীয়দের সমর্থন পাচ্ছেন না তিনি।