সালেহ আহমদ (স’লিপক):
ভয়াবহ বন্যায় ভেসে গেছে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার রাকিব এন্ড সাকিব হাঁস ফার্মের ৮ শতাধিক হাঁস এবং ১টি মাছের ফিসারী। ফার্মের বিদেশী জাতের ১১টি গরু এখনও পানিবন্দি।
উপজেলার ৮নং মনসুর নগর ইউনিয়েনের বানারাই গ্রামের রেজিস্ট্রিকৃত বে-সরকারী রাকিব এন্ড সাকিব হাঁসের ফার্মের মালিকের ভেসে গেছে প্রায় ৮ শতাধিক হাঁস, হাঁটু পানিতে দাড়িয়ে আছে ১১টি বিদেশী জাতের গরু। তালিয়ে গেছে ৪০ বিঘা আমন ধানের ফসলী জমি। ভেংঙ্গে গেছে কৃষকের স্বপ্ন। জীবনের জমানো অর্থ সম্পদ হাঁরিয়ে দিশাহারা বানারাই গ্রামের কৃষক খামার মালিক রেজাক মিয়া পুত্র জুয়েল মিয়া।
পাঁচগাঁও ইউনিয়নের সর্ষপুতা গ্রামে ছিল তার ১২ শত হাঁসের খামার, একটি ফিসারী, ১১টি বিদেশী গরু নিয়ে গরুর ফার্ম। আমন ধান রোপন করেন ৪০ বিঘা জমিতে। এটাই ছিল তার জীবন জীবিকা।
জুয়েল মিয়া জানান, প্রতিটি হাঁসের মুল্য ৬৫০ টাকা করে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকার হাঁস, বিঘা প্রতি আমন জমি ৩ হাজার ৫ শত টাকা করে ফসল রোপন করতে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। ফিসারীর প্রায় ৩ লাখ টাকার মাছ সম্পূর্ণ বন্যায় ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। ফার্মের গরু রক্ষা পেলেও বিশুদ্ধ পানি আর খাবারের জন্য সুস্থ অবস্থায় নেই। কিছু হাঁস আটকানো গেলেও খাদ্য সংকট আর ঔষধের জন্য মারা যাচ্ছে।
পাঁচগাঁও ইউনিয়নের সর্ষসুতা ও তার আশপাশ এলাকার মানুষ এখনও পানি বন্দি। বন্যা পরিস্থতি কিছুটা উন্নতি হলেও নিন্মাঞ্চল থাকায় এই এলাকায় পানি কমেনি। ক্ষুদ্রঋন আর চড়া সুদে টাকা নিয়ে ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন জুয়েল মিয়া। রোপন করেছিলেন আমন ধান। বন্যার পানিতে সব তলিয়ে গেছে।
জুয়েল মিয়া আরো জানান, সর্ষসুতা গ্রামে ১২ শত হাঁস, ১১টি বিদেশী গরু দিয়ে ফার্ম করেছিলাম। সাথে একটি ফিসারিও করেছিলাম। হঠাৎ করে বন্যার পানি প্রবেশ করায় প্রায় ৮শত ৫০টি হাঁস ভেসে যায়। তালিয়ে যায় আমার রোপন করা ৪০ বিঘা জমি। ভাসিয়ে নিয়ে যায় আমার একটি ফিসারি। বিদেশী জাতের ১১টি গরুর ফার্ম আছে। বন্যার শুরু থেকে গরুগুলো পানিতে দাঁড়িয়ে আছে। এগুলোকে সরিয়ে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। বন্যার দুষিত পানিতে দাঁড়িয়ে গরুর গাঁয়ে ফুস্কা পড়ে যাচ্ছে। হাঁস যেগুলো উদ্ধার করতে পেরেছি তাও খাদ্য ও দুষিত পানির কারণে মারা যাচ্ছে। সব কিছু হাঁরিয়ে এখন যা অবশিষ্ট ছিল তাও শেষ হয়ে যাবে। আমাদের জন্য স্বল্প ত্রাণ পেয়ে জীবন বাঁচাতে পারলেও গরু ও হাঁসগুলো খাদ্য এবং ঔষধের অভাবে মারা যাচ্ছে।