চাকরী পিছে না ছুটে
সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি ঃ চাকুরী নামের সোনার হরিণের পেছনে না ছুটে নিজ এলাকায় ২ একর জমি লীজ নিয়ে বেলে দোঁয়াশ মাটিতে মিশ্র ফসল চাষ ও চারা বীজ তৈরী করে বাজিমাত করেছে ইটাকুমারী ইউনিয়নের নরসিংহ গ্রামের শিক্ষিত বেকার যুবক কৃষি উদ্যাক্তা অরুণ কুমার রায়।
সরেজমিনে তার কৃষি খামারে গিয়ে দেখা গেছে একই জমিতে নানা ধরনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মত নানা ফসল। তার নতুন জাতের বারী-৪ জাতের বেগুনের জাত দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। একেকটি বেগুন এক কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের হবে। দেখতে যেমন লাউয়ের মত তেমনি তুল তুলে নরম খেতেও নাকি সুস্বাদু। এ বেগুন চারা লাগানো হয়েছে পাঞ্চিং পদ্ধতিতে। এ পদ্ধতিতে নিড়ানি খরচ একেবারেই নেই, রাসায়নিক সারের তেমন প্রয়োজন নেই। একই ক্ষেতে হাইব্রিড সাড়া বিজলি প্লাস জাতের মরিচ গাছে থোকায় থোকায় ধরেছে মরিচ। মরিচ গাছে চোখ পড়লে নয়ন জুড়িয়ে যায়। সাধারণ মরিচের চেয়ে ফলনও দিগুণ হয়েছে। পাশেই রয়েছে টমেটো ক্ষেত জাতের নাম বাহুবলী। বিস্তৃর্ণ ক্ষেত যেন লাল সবুজের সমারোহ। কোনটি পেকে লাল হয়েছে কোনটি সবুজ রয়েছে এযেন রং এর খেলা একই ক্ষেতের পাশে করলা ক্ষেত জাতের গ্লোরি আশাতীত ফলন পেয়ে বেশ খুশি কৃষক অরুণ কুমার রায়। সে জানান চাকুরির পিছনে বহু ঘুরে সে কৃষি উদ্যোক্তা হয়ে বিষ মুক্ত সবজি উৎপাদন করে দেশ তথা সাধারণ মানুষ কে নির্ভেজাল সবজি খাওয়ানো ব্রত সহ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা লক্ষ্য তার। সে অন্য একটি জমিতে বল সুন্দরী, আপেল কুল সহ কয়েক জাতের বড়ুই চাষ করে এলাকাবাসী কে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। এছাড়াও ক্ষেতের ফাঁকা জমিতে রয়েছে হাইব্রিড পেঁয়াজ, স্কোয়াশ, ফুল কপি, মরিচ সহ নানা ফসল। পীরগাছা কৃষি বিভাগ তাকে নানা ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। অরুণ কুমার রায় আরো বলেন আমি শুধু ভালো ফসল ফলাবো তা হয়না, সাধারণ কৃষকরা যেন ভালো ফসল ফলিয়ে নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন আনতে পারে এবং দেশের কল্যাণে এগিয়ে যেতে পারে সে জন্য ল্যাংড়ার বাজারের কাছে চারা উৎপাদন খামার করে সেখানে মান সম্পন্ন চারা উৎপাদন করে কৃষকদের সরবরাহ করে আসছি। তার নার্সারীতে উচ্চ ফলনশীল বেগুন, পটল, করলা পেঁপে, তরমুজ, লাউ, কুমড়া নানা চারা রয়েছে। যে কেউ গিয়ে চারা নিয়ে এসে তার ক্ষেতে লাগাতে পারে। বর্তমানে পীরগাছা উপজেলায় নবীন কৃষি উদ্যাক্তা হিসেবে অরুন কুমার কে এক নামে সবাই চিনে। তার দেখা দেখি অনেক তরুন কৃষি খামার করতে এগিয়ে আসছে। প্রতিদিন তার খামার এক নজর দেখতে শতশত কৃষক ও শিক্ষিত তরুন আসে। সব মিলিয়ে অরুন কুমার এখন একজন সফল কৃষি খামারী ও কৃষি উদ্যাক্তা।