নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে রাঘববোয়ালদের লুটেপুটে খাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (৮ জুন) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। ‘বাঙালি জাগরণে করণীয় ও সিরাজুল আলম খান’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি।
সিরাজুল আলম খান প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের মুক্তির সংগ্রামের যে চালিকাশক্তি, সেখানে তিনি কাজ করেছেন। আমি ভিন্ন রাজনীতি করেছি, তিনি ভিন্ন রাজনীতি করেছেন কিন্তু তার যে অবদান সেই অবদান কখনো অস্বীকার করা যাবে না। যারা অস্বীকার করতে চায় তারা আসলে বাংলাদেশে স্বাধীনতাকে অস্বীকার করতে চায়।
বাংলাদেশেন স্বাধীনতাকে বিকৃতি করা হয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটি দল একজন ব্যক্তির অবদানের ছাড়া আর কারও কোনো অবদান স্বীকার কারতে চায় না। এর জন্য তারা বাংলাদেশ স্বাধীনতার পেছনে যারা কাজ করছেন, তাদের সবাইকে অবলীলায় অস্বীকার করে। শুধু অস্বীকার করে না, তাদেরকে তারা ছোট করে কথা বলে। একই কারণে তারা জিয়াউর রহমানকেও সহ্য করতে পারে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ একটি ভয়াবহ সংকটের মধ্যে পড়ে গেছে, যেখানে বাংলাদেশের অস্তিত্ব প্রশ্নের সম্মুখীন। এমন একটি শাসকগোষ্ঠী জোর করে ক্ষমতার দখল করে বসে আছে, যারা বাংলাদেশ সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়ন দূরে থাক, মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন থেকে বহু দূরে বাংলাদেশকে ছিটকে ফেলে দিয়েছে। শাসকগোষ্ঠী এখানকার মানুষের কল্যাণ করছে না। তারা মানুষকে শোষণ, নির্যাতন করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সবাই একসঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করছি। আমাদের অধিকার ফিরিয়ে আনা, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা, বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করা, কথা বলার অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে এবং এগুলোই আমাদের অর্জন করতে হবে।
১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে কালো টাকা সাদা করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বলেছেন, মাছ ধরতে আধার (টোপ) দিতে হয়। এটা সেরকম একটা ব্যবস্থা। এতে অন্তত টাকাটা উদ্ধার করা যাবে। এই বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলামকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, হাস্যকর! আমরা দেখলাম টোপ দিয়ে আপনারা কাকে ধরবেন। আপনারা নিজেরাই তো এর সঙ্গে জড়িত। বাজেটে দেখলে বুঝতে পারবেন রাঘববোয়ালদের লুটেপুটে খাওয়ার একটা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব। সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, ভাষানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, সিনিয়র সহ সভাপতি তানিয়া রব, সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া, কে এম জাবির প্রমুখ।