অনলাইন ডেস্ক: তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকা লোকেরা ছুটছে রাস্তাঘাটের শরবতের দিকে। কোথাও স্যালাইন মিশ্রিত নানা শরবত আবার কোথাও লেবুর শরবত। কোমল পানীয় না খেয়ে এসব শরবত খেলে যে আপনার শরীরের ভালো হবে এমন নয়। বরং ফুটপাতের শরবত নিয়ে রয়েছে অসংখ্য শঙ্কা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. দুলাল চন্দ্র দাস জানাচ্ছেন, ‘এই গরমে ফুটপাতের শরবত খাওয়া ঠিক নয়। কারণ গরমে পানিবাহিত নানা রোগ ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা এসব শরবত থেকেই হতে পারে’।
গরমের দিনে আমরা দেখি রাস্তাঘাটে নানা ধরনের শরবতসহ মুখরোচক খাবার বিক্রি করছে। কখনো কখনো এসব খাবারকে আকর্ষণীয় করার জন্য নানা ধরনের কৃত্রিম রঙ ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলো খুবই বিপজ্জনক। সচরাচর ট্যাং বলতে যে ফ্লেভার মিশ্রিত পানীয় আমরা পান করি তা স্বাস্থ্যকর নয়। ট্যাং-এর অতীতে যে ব্র্যান্ড ছিল তার অনুকরণে দেশীয় অনেক ব্র্যান্ড এসেছে যা কৃত্রিম রঙ ব্যবহার করে। এসব কৃত্রিম রঙ আপনার কিডনি আর লিভারের জন্য ভালো নয়। অনেক সময় তা কোমল পানীয়র মতোই ডিহাইড্রেশনে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ফুটপাতের শরবতে কোন পানি ব্যবহার করা হচ্ছে তা কি একবারও ভেবে দেখেছেন? পানিবাহিত নানা জীবাণুর সংক্রমণ বাড়ার এক ধরনের শঙ্কা ঠিকই থাকে। এসব শরবত থেকে ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে। রাস্তাঘাটের শরবতে যে পানি ব্যবহার করা হয় তা অবশ্যই নানাভাবে ক্ষতিকর। পেটের পীড়া বা গ্যাসের সমস্যা দেখা দেওয়া বাদেও নানা ধরনের ভাইরাস সংক্রমণের শঙ্কা থাকে। যে পানি শরবতে দেওয়া হচ্ছে তা যে ফিল্টার করা তাও প্রতীয়মান হয় না।
দিনে অন্তত প্রায় ৬০০ মানুষের কাছে একজন বিক্রেতার শরবত বিক্রি হলেও তারা গ্লাস ব্যবহার করেন পাঁচ থেকে ছয়টি। একজনের খাওয়া শেষ হলে সাধারণ পানি দিয়ে ধোয়ার পর সেই গ্লাসে আবারও শরবত পরিবেশন করা হচ্ছে আরেকজনকে। আবার লেবুর রস যে যন্ত্র দিয়ে চিপে বের করা হচ্ছে, তাতেও ময়লা জমে থাকতে দেখা গেছে। এসব কারণে ফুটপাতে শরবতে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখছেন চিকিত্সকরা। এসব শরবতে লবণ, চিনি বা অন্য ফলও থাকে। কিন্তু যেভাবে প্রস্তুত করা হয় তা কিন্তু স্বাস্থ্যকর নয়। এসব দিক নিয়েও ভাবা জরুরি। এক্ষেত্রে সঙ্গে পানি রাখবেন, যখন সুযোগ পাবেন। পানির সঙ্গে ওরস্যালাইন মিশিয়ে পান করুন। বাইরের শরবত যতটা পারা যায় এড়িয়ে চলুন।