অনলাইন ডেস্ক: তীব্র গরমে অবিরত ঘাম ঝরছে সবার। এ অবস্থায় বাইরে টিকে থাকা বেশ মুশকিল। এরপরও জীবনের তাগিদে সরাসরি সূর্যের নিচে কাজ করতে হয় অনেকের। কেউ কেউ হয়তো অফিস-আদালতে ফ্যান কিংবা এসির নিচে বসে কাজ করেন। তারপরও দিনশেষে গরমের তেজ ভোগ করতেই হয়।
প্রচন্ড গরমের সময় উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় থাকা ব্যক্তিদের জটিলতা বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। যারা রক্তচাপের ওষুধ সেবন করেন, তাদের এই ভ্যাপসা গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওষুধের ডোজের পরিবর্তন করতে হয়। কিন্তু অনেকেই বিষয়গুলো জানেন না বলে রক্তচাপের সমস্যায় পড়েন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী বয়স্করোগ বিশেষজ্ঞ ধীরেশ চৌধুরী বলেছেন, গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তচাপজনিত সমস্যা বাড়তে থাকে। বয়স্কদের এ সময় নিয়মিত চেকআপ করতে হয়। কারণ তাদের রক্তচাপ ক্রমশ কমে আসে। কেউ কেউ দুর্বলতা অনুভব করে। কারও আবার প্রস্রাবের পরিমাণ কমে আসে এবং ডিহাইড্রেশনের শিকারও হয়ে থাকেন অনেকে।
এ চিকিৎসক অভিজ্ঞতা থেকে জানান―অনেক সময় রক্তের সোডিয়াম ও পটাশিয়াম লেভেল পরীক্ষা করে দেখা যায় তা স্বাভাবিকের থেকে অনেক কম। ওই সময় পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে বেগ পেতে হয়। অনেকেই আবার হাসপাতালে ভর্তিও হয়।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শুভ্র ব্যানার্জি জানান, যারা প্রেশারের ওষুধ হিসেবে সিঙ্গেল বা কম্বিনেশন হিসেবে ডাই-ইউরোটিক্স গোত্রের ওষুধ সেবন করছেন, তাদের ক্ষেত্রে জটিলতা একটু বেশিই হচ্ছে। কারণ, এই ধরনের ওষুধ শরীর থেকে অনেকটা জোর করে লবণ-পানি নিঃসরণ করে প্রস্রাবের মাধ্যমে। আবার আর্দ্র গরমে ঘামের মাধ্যমে এমনিই প্রচুর পানি বেরিয়ে যায়, এ জন্য ডাই-ইউরেটিক্স ওষুধের প্রভাবে শরীর থেকে পানি আরও কমে যায়। আর তখন রক্তের ভল্যিউম কমে গিয়ে রক্তচাপ কমে যায়। পাশাপাশি শরীরে পানি ও লবণের ঘাটতি দেখা দেয়। এ কারণে রক্তচাপের ওষুধ ও এর ডোজ গরমের সময় একবার চিকিৎসকের মাধ্যমে যাচাই করে নেয়া দরকার। তা না হলে সমস্যা জটিল হতে পারে।
এদিকে ফার্মাকোলজি বিশেষজ্ঞ অরিজিৎ দাস বলেন, ফ্রুসেমাইড, হাইড্রো-ক্লোর-থায়াজাইড, ক্লোর-থ্যালিডোন থাকা ওষুধগুলো শরীর থেকে পানি ও লবণ বের করে দেয়। এ জন্য আর্দ্র গরমে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হয়। তা না হলে রক্তচাপ মারাত্মক কমে গিয়ে বা ডিহাইড্রেশন হয়ে সোডিয়াম-পটাশিয়াম কমে গিয়ে সমস্যা জটিল হতে পারে।
এ বিশেষজ্ঞ বলন, যারা এ জাতীয় ওষুধ সেবন করেন, তারা গরমের সময় রক্তের সোডিয়াম ও পটাশিয়াম পরীক্ষা করে নিতে পারেন। এতে নিশ্চিত থাকা যায়। কারণ, অনেক সময় বয়স্ক মানুষরা প্রাথমিক অবস্থায় সোডিয়াম-পটাশিয়ামের পরিমাণ কমে যাওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন না। এ জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।