আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আর্কটিক সার্কেল পেনাল কলোনির কারাগারে মারা যাওয়া রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মরদেহ অবশেষে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মৃত্যুর এক সপ্তাহের বেশি সময় পর শনিবার রাশিয়ার বিরোধীদলীয় এই নেতার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
শনিবার অ্যালেক্সি নাভালনির মরদেহ রুশ কর্তৃপক্ষ হস্তান্তর করেছে বলে তার মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ বলেছেন, ‘‘অ্যালেক্সির মরদেহ তার মায়ের কাছে দেওয়া হয়েছে। আমাদের সাথে যারা মরদেহ হস্তান্তরের দাবি তুলেছিলেন তাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ।’’
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক নাভালনি আর্কটিক সার্কেল পেনাল কলোনির একটি কারাগারে মারা যান বলে জানায় রুশ কর্তৃপক্ষ। ওই সময় বলা হয়, কারাগারে হেঁটে আসার পর হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়েছিলেন নাভালনি। তারপর আর তার চেতনা ফেরেনি। তবে নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া পুতিনের নির্দেশেই তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন।
এর আগে, শুক্রবার রুশ কর্তৃপক্ষ প্রকাশ্যে অ্যালেক্সি নাভালনির অন্ত্যষ্টিক্রিয়া না করেই লাশ দাফন করার প্রস্তাব দেন। পরে এই প্রস্তাব মেনে নিতে বিরোধীদলীয় এই নেতার মা লিউডমিলা নাভালনায়াকে তিন ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
ওই দিন নাভালনির দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা মৃতদেহ পাওয়ার জন্য একটি মামলা দায়ের করেছে। গোপন অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় রাজি না হওয়ায় স্থানীয় তদন্তকারীরা নাভালনিকে কারাগারে দাফন করার হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা।
কিরা ইয়ারমিশ বলেছেন, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পরিকল্পনা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তিনি বলেন, লিউডমিলা ইভানোভনা এখনও সালখার্ডে রয়েছেন। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এখনও স্থগিত রয়েছে। কর্তৃপক্ষ পরিবারের ইচ্ছে অনুযায়ী অ্যালেক্সির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করার কাজে হস্তক্ষেপ করবে কি না, তা আমরা জানি না।
নাভালনির দল বলছে, জনসম্মুখে অ্যালেক্সির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে ক্রেমলিন। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া নাভালনির আন্দোলনের প্রতি সমর্থন এবং পুতিনের বিরোধিতায় রূপ নিতে পারে এমন আশঙ্কায় রুশ কর্তৃপক্ষ ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
এদিকে, ভ্লাদিমির ওশেচকিন নামের এক মানবাধিকারকর্মী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টাইমস অব লন্ডনকে আর্কটিক কারাগারের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছেন, রাশিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনিকে হার্টে মাত্র একটি ঘুষি মেরে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হার্টে ঘুরে মেরে হত্যা করার এই কৌশল রাশিয়ার দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির স্পেশাল ফোর্সের পুরোনো পদ্ধতি। শরীরের মাঝখানে, হার্টে এক ঘুষির মাধ্যমে হত্যা করার জন্য তাদের বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এটা তাদের হলমার্ক।