অনলাইন ডেস্ক: অনেকেই বলে থাকেন পেটে পাথর হয়েছে। পেটে কোথায় বা কীভাবে পাথর হয় তা খুব একটা জানা নেই আমাদের। সাধারণত পেটের উপরিভাগের ডান দিকে ছোট নাশপাতিসদৃশ একটি অঙ্গ রয়েছে, যাকে বলা হয় পিত্তথলি। এই অঙ্গের কাজ খাবার হজমে সহায়তা করা। আর এই পিত্তথলিতেই পাথর হয়ে থাকে।
সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সে পিত্তথলিতে পাথর হয়ে থাকে। এছাড়াও যেকোনো বয়সেই পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যা খুবই পরিচিত সমস্যা। আর পুরুষের তুলনায় নারীদের এই রোগ বেশি হয়ে থাকে। সম্প্রতি দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে পিত্তথলিতে পাথর সংক্রান্ত ব্যাপারে কথা বলেছেন রাজধানীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞ ডা. মুসআব খলিল। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
এ চিকিৎসক জানিয়েছেন, পিত্তথলিতে দুই ধরনের পাথর হয়ে থাকে। এর মধ্যে কোলেস্টেরলজাতীয় পাথরের আধিক্যই বেশি দেখা দিয়ে থাকে। যা দেখতে ছোট ধূলিকণা থেকে টেনিস বলের মতোও হয়ে থাকে। যা এক বা একাধিকও হয়ে থাকে। আর পিত্তথলিতে পাথর হলে এর কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না। তবে কারও পাথরজনিত উপসর্গ দেখা দিলে কালক্ষেপণ না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেয়া জরুরি।
পিত্তথলির পাথর যখন সংযোগকারী পিত্তনালির পথ আটকে বা বন্ধ করে কিংবা পিত্তথলির প্রদাহের কারণ হয়, ওই সময় কিছু উপসর্গ দেখা দিয়ে থাকে। এসবের মধ্যে রয়েছে হঠাৎ তীব্র পেট ব্যথা, যা কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেকের বমি বমি ভাব হয়। চোখ ও ত্বক হলুদ বর্ণ ধারণ করে, এ সময় বুঝতে হবে জন্ডিস হয়েছে। সাধারণত কারও পিত্তনালিজনিত সমস্যা হলে জন্ডিস হয়ে থাকে। জ্বর হয় বা শরীরের তাপমাত্রাও অনেক বৃদ্ধি পায়।
পিত্তথলির পাথর হওয়ার ঝুঁকিতে কারা: নারী, স্বাভাবিকের তুলনায় ওজন বেশি বা মেদবাহুল রয়েছে, বয়স ৪০ বা এর বেশি, চর্বিজাতীয় খাবার বেশি খাওয়ার ফলে, শাকসবজি যারা কম পরিমাণে খেয়ে থাকেন, অতি দ্রুত ওজন হ্রাস পেলে, ইস্ট্রোজেনসম্পন্ন ওষুধ সেবন, বিশেষ কোনো রক্তরোগ হলে এবং লিভার বা যকৃতের কোনো রোগ হলে।
যেসব জটিলতা হতে পারে: পিত্তথলিতে পাথর হলে কোলেসিস্টাইটিস বা পিত্তথলির প্রদাহজনিত সমস্যা ক্রমশ জটিল হতে পারে। পিত্তনালির প্রতিবন্ধকতাজনিত জটিলতারও আশঙ্কা থাকে। প্যানক্রিয়াটাইটিস বা অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহজনিত জটিলতা হতে পারে। আবার পিত্তথলির ক্যানসারও হতে পারে। যদিও এই ক্যানসারের ঝুঁকি বেশ কম।
পিত্তথলিতে পাথরের চিকিৎসা: এ রোগের উপসর্গের একমাত্র চিকিৎসা হচ্ছে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পিত্তথলির অপসারণ। এ জন্য পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার কোনো উপসর্গ দেখা দিলে সময় নষ্ট না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।