নিজস্ব প্রতিনিধি : ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্র সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজ শুরু করে অন্তর্বর্তী সরকার। দুর্নীতি, দখল,চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর বার্তা দিচ্ছেন সরকারের উপদেষ্টারা। কিন্তু এসবে গা করছে না ঝাউডাঙ্গা বাজারের ভূমিখেকো একটি গোষ্ঠী। স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই সিন্ডিকেট। এতে বেহাত হচ্ছে মূল্যবান সরকারি জমি। কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
সরজমিনে একাধিক ব্যক্তি ও ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরার বৃহত্তম ঝাউডাঙ্গা বাজারে সরকারি পেরিফেরিভুক্ত খাস জমিতে কোন ডিসিআর ও সংস্কারের অনুমতি ছাড়াই খাস জমিতে গনহারে অবৈধ পাকা ইমারতের দোকান তৈরি হচ্ছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এসব সরকারি পেরিফেরিভুক্ত সম্পত্তিতে ( ডিসিআর অনুমতি থাকলে) ৫ ইঞ্চি ইটের গাথনি ও টিন সেড ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু ৫ আগষ্টের পর সেই সব জায়গায় প্রকাশ্যে নির্মান হচ্ছে একতলা ও দ্বিতীয়তলা ভবন।
বাজার ঘুরে দেখাগেছে, বাজারে অবৈধ ভাবে ২০ থেকে ২৫ টি দোকানের নির্মান কাজ সম্পন্ন ও চলমান আছে, এরমধ্যে, মুদিখানা পট্রিতে রবিউল ইসলাম এক তলা দোকান ঘর, তিন নম্বর গলিতে মমিনের দুই তলা ঘর, বাসস্ট্যান্ডে রফিকুল ফারুকের দুইতলা দোকান ঘর, জয়ন্ত ঘোয়ের ৪ টি দোকান, রবি ঘোষের ৩ টি দোকান, প্রসেনজিং ডাক্তারের দুই তলা ভবন, চাউল পট্রিতে আদেশ ঘোষের একতলা দোকান, জনাধন বিশ্বাসের দোকান, জয়ান্ত ঘোষের দোকান, তাপসের দোকান, বিধানের দোকান সোনালী ব্যাংক সংলগ্ন মানিক ঘোয়ের দোকান, মনিরুজ্জামানের দোকান, সহকারি ভুমি অফিসের সামনে শফিকুল ইসলামের দোকান, পার্থর দোকান উজ্জল ঘোষের ৪ টি এক তলা ভবনসহ বেতনা নদীর তীরে সারিবদ্ধ ভাবে নির্মিত হচ্ছে অবৈধ দোকান ঘর, পরিমল ঘোষের দোকান, ইমান আলীর দোকানেরর নির্মান কাজ চলছে ।
ঝাউডাঙ্গা বাজারের কয়েকজন কাঁচামাল ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা অধিকাংশই কাঁচাবাজারের নির্ধারিত ফুটপাতে বসি। প্রতিদিন এভাবে পাকা দোকান তৈরি হতে থাকলে আমাদের চট পেতে বসার জায়গাও থাকবে না। তারা আরও বলেন, আমরা বাজারের কালী মন্দির, মাছ বাজারের পাশে দোকান পেতে বসি। যদি এভাবে কাঁচাবাজার সংকীর্ণ হতে থাকে তাহলে অধিকাংশ কাঁচামাল ব্যবসায়ীর সাতক্ষীরা-যশোর মহা সড়কের পাশে বসা ছাড়া উপায় থাকবে না।
এদিকে স্থানীয় ব্যাবসায়ীদের দাবি, গত ৫ আগষ্টের পর স্থানীয় প্রভাবশালী এক বিএনপি নেতা, যুবদল ও সেচ্ছাসেবক দলের ৫ নেতার নেতৃত্বে এ দখল বানিজ্য চলছে। অবিলম্বে এসব ব্যবসায়ীরা অবৈধ দোকান নির্মান বন্ধ ও নির্মিত ভবন উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ঠ উর্ধতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে অভিযুক্ত বিএনপি ও যুবদল নেতারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সরকারি জমি দখল বন্ধে প্রশাসনের ব্যাবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানান।
এবিষয়ে ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন আপনি অফিসে এসে কথা বলেন। বলে ফোন কেটে দেন।