আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রধান শেহবাজ শরিফ। সোমবার (৪ মার্চ) ইসলামাবাদের প্রেসিডেন্ট হাউজে পাকিস্তানের ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তিনি।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামাবাদের প্রেসিডেন্ট হাউজ আইওয়ান-ই-সদরে পিএমএল-এনের প্রধান শেহবাজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রীর শপথবাক্য পাঠ করান প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান এবং জোটসঙ্গী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারিসহ সিন্ধ, পাঞ্জাব ও বেলুচিস্তান প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরা।
দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল আসিম মুনীরও শেহবাজ শরিফের শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া পাকিস্তানে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরাও শেহবাজের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। শপথ নেওয়ার পর পাকিস্তানের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
এর আগে, নানা নাটকীয়তার পর রোববার (৩ মার্চ) দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের (এনএ) ভোটাভুটিতে ২০১ জন আইনপ্রণেতার ভোট পেয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শেহবাজ শরিফ। ২০২২ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন শেহবাজ শরিফ। সেবার ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্বপালন করেন তিনি।
রোববার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের (এসআইসি) প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ওমর আইয়ুব খানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন শেহবাজ শরিফ। এতে ২০১ ভোট পেয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শেহবাজ। অন্যদিকে, তার প্রতিদ্বন্দ্বী ওমর আইয়ুব খান পান মাত্র ৯২টি ভোট।
ভোটাভুটির আগেই অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল, নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই শাহবাজই হচ্ছেন পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।কারণ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে নিজের দল পিএমএল-এনের পাশাপাশি পিপিপি, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি), পাকিস্তান মুসলিম লীগ-কায়েদ (পিএমএল-কিউ), বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টি (বিএপি), পাকিস্তান মুসলিম লীগ-জিয়া (পিএমএল-জেড), ইস্তেহকাম-ই-পাকিস্তান (আইপিপি) ও ন্যাশনাল পার্টির (এনপি) সমর্থন নিশ্চিত ছিল শাহবাজের। এই সাত দলের জোটে মোট আসন সংখ্যা ২০৫টি।
ভোটাভুটি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পরিষদ থেকে বেরিয়ে যান জমিয়তে উলেমা-ই-ইসলাম-ফজলের (জেইউআই-এফ) সদস্যরা। তারা আগেই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এছাড়া, ভোটদানে বিরত ছিলেন বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টির সরদার আখতার মঙ্গল।
এখন বাকি থাকলো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, যা হতে যাচ্ছে ৯ ফেব্রুয়ারি। এতে পিপিপি’র কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির বিরুদ্ধে লড়বেন পাশতুনখোয়া মিলি আওয়ামী পার্টি (পিকেএমএপি) প্রধান মাহমুদ খান আচাকজাই।