https://www.a1news24.com
২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৬:৫৫

পঞ্চগড়ে অবৈধপথে ভারতে প্রবেশের চেষ্টায় আটক ৮ বাংলাদেশিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর!

ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার সীমান্ত দিয়ে একজন দালালের সহায়তায় অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টায় আটক ৮ বাংলাদেশি নাগরিককে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

জানা গেছে, দেশের চলমান পরিস্থিতির মাঝে মনের ভয়ে নিজ থেকে আতঙ্কিত হয়ে তারা দেশ ত্যাগের চেষ্টা করছিল বলে স্বীকারক্তি দেয়ায় বিজিবি সহ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে তাদের আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যেমে হস্তান্তর করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ।

বুধবার (২৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ৪টার দিকে উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গোলাপদীগছ সীমান্ত এলাকার মেইন পিলার ৭৩৯ এর ৪ নম্বর সাব পিলার হয়ে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে বাংলাদেশের এক কিলোমিটার অভ্যন্তরে শুকানী বিওপি’র বিজিবি সদস্যদের টহল টিম তাদের আটক করে। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে আটককৃতদের তেতুঁলিয়া মডেল থানায় আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যেমে হস্তান্তর করে বিজিবি।

আটককৃতরা হলেন- দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার বিনষপুর গ্রামের মদন দাসের ছেলে রমেশ দাস (৩৮), রমেশের ছেলে পল্লব দাস (১২), সুশীল দাসের ছেলে প্রশান্ত দাস (১০), মদন দাসের ছেলে সুশীল দাস (৩৯), অধীর দাসের মেয়ে পাতলী রাণী দাস (৩৪), অধীকান্ত দাসের মেয়ে আরতী দাস (৩৭), সুশীল দাসের মেয়ে সুবর্ণা দাস (১৮), অলিল দাসের ছেলে পরিমল দাস (২৮)। আটককৃতদের ভারতে পারাপার হতে সহায়তার অভিযোগে একই সময় আটক হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের গোলাপদীগছ গ্রামের ইসলাম আলীর ছেলে দালাল সাইদুল ইসলাম হনু (৪৪)। তবে আটককৃতদের পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেয়ার প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও পূর্বের একটি মামলায় ইনুকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

৫৬ বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে সীমান্তে গোলাপদীগছ গ্রামের সীমান্তে টহল দিচ্ছিল বিজিবি। এসময় সীমান্তের ৭৩৯ এর সাব পিলার ৪ এলাকা দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন কয়েকজন বাংলাদেশি। পরে তাদের এক দালাল সহ ৯ জনকে হাতেনাতে আটক করা হয়। এর আগে তারা বুধবার রাতেই ওই এলাকার এক ব্যাক্তির বাড়িতে অবস্থান নেয়। তবে কি কারণে তারা বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাচ্ছিলো তা তাৎখনিক ভাবে জানা যায় নি।

তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায় বলেন, আটককৃতরা অনেকটা ভীত হয়ে নিজ ইচ্ছায় দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছিলেন। তবে তাদের কেউ ভয় দেখিয়ে ভারতে যেতে বাধ্যও করেনি বলে আমাদের জানিয়েছে তারা। আমরা তাদের নিরাপত্তা সহ সার্বিক বিষয়ে আশস্ত করেছি। সেই সাথে বিজিবি ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের আইনী প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় আটক স্থানীয় ব্যাক্তিকে পূর্বের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আমরা চাই এই বিষয়টি নিয়ে কেও যেন আতঙ্কিত না হয়।

এদিকে, বুধবার একই দিন রাতে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বড়শশী সীমান্তের বিপরীতে ভারতীয় ১৫ বিএফএস ব্যাটালিয়ের আওতাধীন মহাদেব বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে চার বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করে।

আটকরা হলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের কাউতাঠি এলাকার নিমাই চন্দ্র বর্মন (৪২), পীরগঞ্জ উপজেলার থুমানিয়া গ্রামের সনাতন রায় (২৮), দেবীগঞ্জ উপজেলার কালপীর গ্রামের পরিতোষ রায় (২১) এবং নীলফামারী সদরের ডুবাছড়ি গ্রামের মালিন চন্দ্র রায় (২৫)।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে বিজিবি ও বিএসএফের কোম্পানী কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ। তাদের বোদা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে সকল আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

আরো..