অনলাইন ডেস্ক: নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ ঋণের ব্যবস্থা করবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি পাওয়া দেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক নগদ লিমিটেড। গত শুক্রবার (১৭ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ট্রাস্টের (উই) উদ্যোগে আয়োজিত ‘উই হাটবাজার’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
অনুষ্ঠানে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নগদ ডিজিটাল ব্যাংক থেকে আমাদের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ আর্থিক ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। নারী উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা এই সাহসী ও দক্ষ নারীদের শক্তি কাজে লাগিয়ে শহর-গ্রাম ও নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করে অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।
চলতি বছরই পূর্ণাঙ্গভাবে যাত্রা শুরু করবে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ব্যাংক চালুর জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে ক্রেডিং রেটিং করা বা বিশ্বের সর্বাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যবহার করার মতো বিষয়গুলোও ইতোমধ্যে ট্রায়াল দেয়া হয়েছে।
দেশের প্রথম মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) হিসেবে নগদ নারী উদ্যোক্তা বা এজেন্ট তৈরি করেছিল। যার ফলে অন্য পেশার মতো এমএফএস বাজারে একজন নারী উদ্যোক্তার অংশগ্রহণও নিশ্চিত করেছিল নগদ।
নগদ ডিজিটাল ব্যাংক যাত্রা শুরু করার আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা জামানতহীনভাবে দেশের মানুষের মধ্যে এক অঙ্কের মুনাফায় ঋণ বিতরণ করবে। মূলত পরিচালন ব্যয় শূন্যের কাছাকাছি হওয়ায় এবং যাবতীয় ঋণের কর্মকাণ্ড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে পরিচালনা করায় তাদের পক্ষে জামানতবিহীন ঋণ প্রদান সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে নারী উদ্যোক্তাদের জন্যও এরকম জামানতবিহীন ঋণ প্রদান করবে তারা।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের একটি সেবা হিসেবে যাত্রা শুরু করে নগদ মোবাইল ব্যাংকিং। শুরুতেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট খোলা, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যয় কমানোর মতো কাজ করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে নগদের গ্রাহক সংখ্যা সাড়ে ৯ কোটি ছাড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি দৈনিক গড়ে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা লেনদেন করছে। এর ফলে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের আয়েও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
নগদ লিমিটেড ও ডাক বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, নগদের সেবা থেকে মোট আয়ের ৫১ শতাংশ আয়ের ভাগ পায় বাংলাদেশ ডাক বিভাগ। বাকি ৪৯ শতাংশ পায় নগদ লিমিটেড। প্রথম বছর শেষে অর্থাৎ, ২০২০ সালেই নগদ ডাক বিভাগকে ১ দশমিক ১২ কোটি টাকা আয়ের ভাগ প্রদান করে। পরের বছর (২০২১) ৩ দশমিক ৩২ কোটি ও ২০২২ সালে ৪ দশমিক ৫০ কোটি টাকা প্রদান করে নগদ। পাশাপাশি ২০২৩ সালে এক্ষেত্রে ৫ কোটির ঘর ছাড়িয়েছে তারা। আর এ বছরের জন্য নগদ ৫১ শতাংশ আয়ের ভাগ হিসেবে ডাক বিভাগকে ৫ কোটি ৫১ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৮ টাকার রাজস্ব বুঝিয়ে দিয়েছে।
সম্প্রতি সচিবালয়ে নগদ কর্তৃপক্ষ ডাক বিভাগের ২০২৩ সালে প্রাপ্য লভ্যাংশের চেক হস্তান্তর করে। অনুষ্ঠানে নগদ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী তানভীর এ মিশুকের কাছ থেকে চেক গ্রহণ করেন ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) তরুণ কান্তি সিকদার। ওই সময় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকও উপস্থিত ছিলেন।