https://www.a1news24.com
১৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৫:২৫

নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের বিচারে তারকারা কী ভাবছেন?

অনলাইন ডেস্ক: মাগুরায় ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনায় উত্তাল দেশ। ধর্ষণে অভিযুক্তদের জনসম্মুখে ফাঁসি ও জনপরিসরে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চলছে। সঙ্গে নিন্দার ঝড় বইছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। এই মুহূর্তে হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সেই শিশু। এমন মর্মান্তিক ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা সবার মনে দাগ কেটেছে, তারকা অঙ্গনও বিচারের দাবিতে হয়েছে সরব। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শান্তি চাচ্ছেন তারকারা।

শাকিব খান

ঢাকাই সিনেমার মেগাস্টার শাকিব খান এক ফেসবুক পোস্টে স্পষ্ট বিচার চাইলেন সেই ভুক্তভোগী শিশুটির জন্য। হ্যাশট্যাগে শিশুটির নাম উল্লেখ করে লেখেন, ‌‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। মেগাস্টারের কাছ থেকে এমন প্রতিবাদ পেয়ে অনুরাগীরাও সহমত পোষণ করে বিচারের দাবি তুলেছেন। শাকিবের করা পোষ্টে মন্তব্য ঘরে তার অনুরাগীদের অধিকাংশই এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেন, সঙ্গে প্রতিবাদও জানান।

মাসুম পারভেজ রুবেল

ধর্ষণ থেকে রক্ষা পেতে নারীদের ‘কারাতে’ শিক্ষা জরুরী বলে মনে করছেন চিত্রনায়ক মাসুম পারভেজ রুবেল। সম্প্রতি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথোপকথনের সময় একথা বলেন তিনি। রুবেল বলেন, ‘আমি সবসময় বলে এসেছি কারাতে মেয়েদের জন্য খুবই দরকার। এর কোনো বিকল্প নেই। আমি মনে করি নারীদের জন্য মার্শাল আর্ট অপরিহার্য। প্রতিটি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় তরুণীদের এই কৌশল শেখা উচিত। আমরা যদি নারীদের কারাতের শিক্ষাটা দিতে পারি তাহলে ধর্ষণ থেকে ৭০ ভাগ পরিত্রাণ পাবো।

শবনম বুবলী

‘একজন নারী মা, মেয়ে, স্ত্রী, বোন- তাই আসুন, সবাই নারীদের সম্মান করি। নারীরা এগিয়ে থাকলে দেশ ও জাতি এগিয়ে যাবে। নারীদের হাতেই মানব শিশুর বিকাশ হয়।’

নিলয় আলমগীর

‘ধর্ষক কারো ভাই না, কারো বাবা না, কারো সন্তান বা কারো স্বামী না, ধর্ষকের একটাই পরিচয়, সে ধর্ষক। ধর্ষকের একটাই শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।’ নিলয়ের এ দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন তার অনুসারীরা। মন্তব্যের ঘরে অনুরাগীরা নিলয়ের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন।

তাহমিনা সুলতানা মৌ

‘আমি নারী, আমি সব পারি না। পারতেও চাই না। তবে আমি যখন ‘মা’, তখন আমি সব পারি। মায়েরা যদি একসঙ্গে জেগে ওঠে তাহলে সব পশুকে ধ্বংস করা সম্ভব। সব নারী তাদের ব্যক্তিত্বে জ্বলে উঠুক- এ কামনা করি। সব শিশু ও মেয়েরা নিরাপদ থাকুক…। ন্যায়বিচার পাক। প্রতিটি দিন আমাদের দিন।

ফাহমিদা নবী

মাগুরার ঘটনাসহ নানা জায়গায় নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। এমন অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে। কঠিন শাস্তি হতেই হবে। শাস্তি হচ্ছে না বলেই হয়তো অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। সেজন্য প্রথম কাজ হচ্ছে অপরাধীর শাস্তিটা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। মেয়েদের জীবনের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা কেন এতটা অসহায়? কবে এর সমাধান হবে? ২০২৫ সালে এসে উন্নত বিশ্বের কাছে আমরা কী জবাব দেবো? সব নারীর নিরাপত্তা চাই। নারীরা সমঅধিকার পাবে, সম-উত্তরাধিকার পাবে—এটাই চাই।

বিদ্যা সিনহা মিম

ধর্ষণের শাস্তি সর্বোচ্চ হওয়া দরকার। অল্প শাস্তি হলে অপরাধীরা একসময় জামিনে বের হয়ে আসবে এবং আবারও একই কাজ করবে। সেজন্য কঠিন শাস্তি দরকার। তাদের ফাঁসি চাই। দুনিয়ার অনেক দেশে কঠিন শাস্তি হয়। আমিও চাই এমন বর্বরদের কঠিন শাস্তি হোক। ফাঁসি হোক। যখন অপরাধীরা দেখবে ধর্ষণের বিচার হচ্ছে এবং ফাঁসি হচ্ছে, তখন ভয় পাবে। সামান্য জেল কিংবা জরিমানায় তারা ভয় পাবে না। ফাঁসির কথা শুনলে অবশ্যই ভয় পাবে এবং এমন জঘন্য অপরাধ করার সাহস পাবে না। ফাঁসির কথা যখন মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়বে, তখন দ্রুত অপরাধ কমে যাবে। নারীরা প্রথমত একজন মানুষ। তাকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। তারপর একজন মা কিংবা বোন। মায়ের ও বোনের সম্মান রাখা সবার দায়িত্ব।

অপু বিশ্বাস

মাগুরার ঘটনাটি আমাকে মর্মাহত করেছে, কষ্ট দিয়েছে। এটি একটি উদাহরণ-মাত্র। আরও তো আছে। আমরা এমন মন খারাপ ও ভয়াবহ দুঃখের খবর চাই না। সুন্দর ও ইতিবাচক খবর শুনতে চাই। নারীকে নারী কেন, মা হিসেবে দেখা উচিত। একজন নারী প্রথমে একজন মা। একজন বোন। একজন স্ত্রী। যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছেন, তারাও তো কোনো মায়ের সন্তান। কোনো না কোনো মা তাদের পৃথিবীতে এনেছেন। এই বোধটুকু কি নেই? আট বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। কোন ভাষায় এর প্রতিবাদ করব তা জানা নেই। সব নারীর নিরাপত্তা চাই।

তানজিকা আমিন

আমরা নারী দিবস পালন করছি, এটা বাহুল্যতা-মাত্র। যে দেশে আট বছর বয়সী শিশু ধর্ষণের শিকার হয়, এর চেয়ে বেদনার কী হতে পারে? আমরা মেয়েরা শঙ্কিত। জানি না কবে এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাব। উপরে যারা আছেন, বড় বড় কথা বলছেন, তারা একটু দেখুন প্লিজ। মানসিকতা ও মানবিকতা তো শূন্যের কোটায়। এখান থেকে উত্তরণের পথটা দ্রুত খুঁজুন এবং সমাধান করুন। নারীকে সম্মান করলে, নারীর মর্যাদা রক্ষা করলে সমাজ ও দেশ আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।

মৌসুমী হামিদ

আট বছর বয়সী শিশুর সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে—এটা ভাবা যায়? ফেসবুকে ঢুকতে পারি না। ফেসবুকে খুন ও ধর্ষণের খবর দেখলেই অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমরা খুব করে নারী স্বাধীনতার কথা বলি। আর নরপশুরা সুযোগ পেলেই নারীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এমন মানসিকতার কারণ কী? কোথায় যাচ্ছি আমরা? এত অবক্ষয় আমাদের? আমরা কি সহনশীল ও ভালো হতে পারি না? নারীকে মা ও বোনের চোখে দেখতে পারি না? এটা সামাজিক অবক্ষয়। একজন শিশুকে পর্যন্ত নরপশুরা রেহাই দিচ্ছে না। একজন শিশু বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। এটা কীভাবে মেনে নেব?

দীপা খন্দকার

প্রথমে বলব আমি একজন মানুষ। তারপর আসে নারী বা পুরুষ। নারীর ওপর যা শুরু হয়েছে, এটা মেনে নিতে পারছি না। এটা মেনে নেওয়া যায় না। মানসিকতা কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে? আরেকটি কথা—একজন মেয়ে কী পোশাক পরবে, এটা নিয়ে কেন অন্য পুরুষ কথা বলবে? এই অধিকার তাকে কে দিয়েছে? একজন মেয়ে জিনস পরবে, টি শার্ট পরবে নাকি ওয়েস্টার্ন পরবে নাকি শাড়ি পরবে, সেটা তার অধিকার। আমরা কি কখনো কোনো পুরুষকে বলি, আপনি লুঙ্গি পরেছেন কেন? তার পোশাক নিয়ে কোনো মেয়ে কখনো কিছু বলেছেন? তাহলে পুরুষরা এটা নিয়ে বলার অধিকার কোথায় পেল? এসব মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসা উচিত।

আরো..