https://www.a1news24.com
৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ১০:৫০

নানা অনিয়মে চলছে কাউনিয়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স!

কর্তৃপক্ষ নিরব দর্শক

কর্মকর্তার অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারীতা, অসৌজন্য আচরণের প্রতিকার চেয়ে আবেদন

সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি ঃ কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ডাক্তার ও কর্মচারীদের হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। জানাগেছে ৫০শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়! স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৫জন জুনিয়র কনসালটেন্ট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ সাদিকাতুল তাহিরিণ এর বিভিন্ন অনিয়ম, অসহযোগিতা, স্বেচ্ছাচারীতা এবং অসৌজন্য মূলক আচরণের প্রতিকার চেয়ে রংপুর বিভাগী পরিচালক (স্বাস্থ্য) বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এছারাও এলাকার আয়কর আইনজীবী হুমায়ুন কবীর মুকুল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নানা অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগে জানাগেছে, স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ সাদিকাতুল তাহিরিণ নিম্মমানের সার্জিকেল সামগ্রী ক্রয়, জুনিয়র কনসালটেন্টদের সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণ, অফিসে অনিয়মিত, স্বাস্থ্য কমপ্লে¬েক্সর অব্যবস্থাপনা, আলট্রাসনোগ্রামের টাকা আত্মসাতের চেষ্টা, বিভিন্ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাজ না করে সরকারী অর্থ আত্মাসাত, কর্মস্থলে না এসে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে ভূয়া বিল উত্তোলন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথা বলে ডাক্তারদের ব্লাকমেইল করা সহ বিভিন্ন অভিযোগ। একজন সেবা গ্রহীতার লিখিত অভিযোগে জানাগেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ সাদিকাতুল তাহিরিণ কাউনিয়ায় যোগদানের পর থেকে অফিস করেন সপ্তাহে ২/৩দিন। তিনি বিনা ছুটিতে কার্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন। নিজস্ব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাসপাতালকে সীমাহীন অনিয়ম, দূর্নীতি ও লুটপাটের আখড়ায় পরিণত করেছেন। তিনি কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাসা ভাড়ার টাকা উত্তোলন করলেও বাসা ভাড়ার টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা নিয়ে ধোয়াসা রয়েছে। এছাড়াও প্রধান সহকারী শরিফুল ইসলাম এর সহয়তায় বিভিন্ন বিলের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে আসছেন। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে চিকিৎসাসেবা প্রত্যাশী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠলে তাকে ৪দিন মেডিকেলে রেখে পরে বাচ্চার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে আমাকে রংপুরে পাঠিয়ে দেন। গত মার্চ মাসে স্বাস্থ্য সচিব এর পরিদর্শন উপলক্ষে বিভিন্ন রুম রং, লাইটিংসহ বিভিন্ন খরচের জন্য স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর রংপুর হতে ৭৫ হাজার টাকা জরুরী বরাদ্দ নিয়ে ঠিকাদারকে পরিশোধ করেন। একই খরচের জন্য তিনি এবং প্রধান সহকারির যোগসাজশে ডাক্তার, কর্মচারীদের নিকট থেকে চাঁদা উত্তোলন করেন প্রায় ১লাখ টাকা। যে টাকা তিনি আত্মসাত করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিদ্যুৎ, পানির লাইন, ফ্যান মেরামতের ৫০ হাজার বরাদ্দ নিলেও সেই টাকা খরচ না করে তিনি এবং প্রধান সহাকারি সম্পুর্ন টাকা আত্মসাত করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তার আচরণে অতিষ্ঠ হাসপাতালের প্রায় সকল স্টাফ ও সেবা নিতে আসা সাধারন মানুষ। বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লে¬েক্সর স্বাস্থ্য সেবার মান নিম্নগামী। মেডিকেলে ধোপা নিয়োগে স্থানীয় দোকান এবং প্রকৃত ধোপা নিয়োগের বিধান থাকলেও তিনি শিশিরের যোগসাজসে বহিরাগত ধোপা নিয়োগ দেন। এছারা তিনি প্রধান সহকারির দ্বারা কনসালটেন্টদের তদারকি করা, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত বিষয়ে অনাধিকার চর্চা করে, ঠিকাদারের মাধ্যমে নিন্ম মানের সার্জারী সামগ্রী ক্রয়ে বাধ্য করা সহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে¬েক্স গিয়ে দেখাগেছে, ভেতরে রোগী দেখছেন ডাক্তার আর তার সামনে কিছু স্যাম্পল ঔষধ হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছেন কোম্পানীর লোক। আর বাহিরে অপেক্ষমান রোগীরা বলেছেন ডাক্তার রোগী না দেখে ঔষধ কোম্পানীর লোকের সাথে ব্যস্ত সময় পার করছে। বিদ্যুৎ চলেগেলে হাসপাতাল ভুতুরে অবস্থার সৃষ্টি হয়, জেনারেটর থাকলেও তা চালান হয় না। রোগীর খাবার নিম্ন মানের কিন্তু কিছু বলার নাই। বাথরুমে প্রবেশ করাই দায়, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার বালাই নেই। তিনি যোগদানের পর হাসপাতালের এমন অবস্থার বিষয়ে একজন কর্মচারীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। প্রধান অফিস সহকারি শিশির এগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন। আমরা কিছু বললে তিনি আমাদের সমস্যা করবেন। সার্বিক বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাদিকাতুল তাহিরিণ এর সরকারি মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অসত্য, রবং আমি যোগদান করার পর থেকে অফিস চলাকালীন ডাক্তারকে বাইরে অযথা ঘুরাফেরা বন্ধ করেছি। আগের সব অসংগতি গুলো দুর করেছি, মেডিকেলে অনেক যন্ত্রপাতি নিয়ে এসেছি, যারা এমন অভিযোগ করেছেন সঠিক তদন্ত হলে আসল সত্যটা বেড়িয়ে আসবে। আমি নিজে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট তদন্ত চেয়েছি। এলাকাবাসী জানান স্বাস্থ্য কমপ্লে¬েক্স বর্তমান অবস্থায় সামগ্রীক স্বাস্থ্য সেবা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।

আরো..