https://www.a1news24.com
২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৬:৫৪

দেশের সংকট উত্তরণে বিএনপি কি চিন্তা করছে তা জানতে চেয়েছে রাশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ঢাকায় রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দার মনতিৎস্কি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে তাদের বৈঠক হয়।

মির্জা ফখরুল ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং স্পেশাল অ্যাসিসট্যান্ট টু দ্য চেয়ারপারনস ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য শ্যামা ওবায়েদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর আমীর খসরু সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের দিনক্ষণ জানতে চেয়েছেন।

“বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট, নির্বাচন ইত্যাদি বিষয়ে তারা জানতে চেয়েছেন। আমরা বলেছি, ইতোমধ্যে আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি যে, যত শিগগিরই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যাবে।

“তারা টাইম ফ্রেম জানতে চেয়েছে, আমরা কোনো টাইম ফ্রেম বলিনি। আমরা বলেছি যে, আমরা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এবং তাদের কার্যক্রমে আমরা পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রিফর্মগুলো- যে রিফর্মগুলো নিয়ে আলোচনা হবে, সেগুলো তাড়াতাড়ি করে একটা নির্ধারিত সময়ে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।”

এছাড়া দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান আমীর খসরু।

শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর জাতিসংঘের সমন্বয়কারী, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত এবং চীনা রাষ্ট্রদূতের পর এবার রুশ রাষ্ট্রদূত বৈঠক করলেন বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে।

আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে আমীর খসরু বলেন, “উনারা (রাশিয়া) জানতে চাচ্ছেন, বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যতে এই সংকট উত্তরণ নিয়ে আমরা কী চিন্তা করছি। আমাদের তরফ থেকে পরিষ্কার বলা হয়েছে যে, বিএনপি সবার সাথে সম্পর্কে বিশ্বাসী। কোনো বিশেষ দেশ বা আলাদা ভাবে আমরা কাউকে দেখি না।

“সকল দেশের সাথে সম্পর্ক থাকবে এবং বাংলাদেশের মানুষের সাথে রাশিয়ার মানুষের সম্পর্ক থাকবে, দুই দেশের সম্পর্ক থাকবে। সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমি যেটা বলেছি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

পর্যটন খাতে রাশিয়ার সাথে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, “রাশিয়া একটি বিশাল দেশ। সেখানে টুরিজমের সুযোগ আছে। তারা এখানে বোধহয় একটা অফিসও খুলতে চাচ্ছে, ভবিষ্যতে ব্যাংকের শাখা করতে চাচ্ছে, আমরা স্বাগত জানিয়েছি।

“ভবিষ্যতে রাশিয়াতে বাংলাদেশকে কীভাবে তুলে ধরা যায়, রাশিয়ার বাজারে বাংলাদেশের প্রোডাক্টের একটা জায়গা আমরা তৈরি করতে তাদের সহযোগিতার কথা বলেছি। সুতরাং সার্বিকভাবে দুই দেশের যে সম্পর্ক তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, যেভাবে আমরা অন্যান্য দেশের সাথে করছি।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খসরু বলেন, “স্বাভাবিকভাবে সবাই আজকের অবস্থান জানতে চায়, আগামী দিনের অবস্থান জানতে চায়। সেই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আজকে যে সম্পর্ক আছে, আগামী দিনে সেই সম্পর্ক থাকবে কি না; আমাদের বক্তব্য- পুরোপুরি সম্পর্ক থাকবে। আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে যাবে, সব দেশের সাথে থাকবে। আমরা সিলেক্টিভলি কোনো দেশকে আগে বা পরে সেইভাবে দেখি না।”

বিএনপির পররাষ্ট্রনীতি তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা সবার সাথে সুসম্পর্ক রেখে যে দুইদেশের মধ্যে যে কম্পারেটিভ অ্যাডভানটেজগুলো আছে, সেগুলোর সুযোগ নিতে হবে। … দুই দেশের সম্পর্ক এমন হতে হবে যাতে পরস্পর লাভবান হয়, পরস্পরের প্রতি সন্মানবোধ থাকতে হবে, মিচুয়াল রেসপেক্ট থাকতে হবে, মিচু্য়ালি বেনিফিটেড হতে হবে, সেই বিষয়গুলো আমাদের আলোচনায় উঠে এসেছে।

“সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের যেখানে সম্ভাবনা আছে রাশিয়াতে, রাশিয়ার যদি সম্ভাবনা থাকে এখানে, বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করে- বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ রক্ষা করে সম্পর্ক গড়ে উঠবে। বন্ধুত্ব হয় দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান মিচুয়াল রেসপেক্ট ও মিচুয়াল ইন্টারেস্টের ভিত্তিতে। সুতরাং রাশিয়ার সাথে আমাদের সেভাবে সম্পর্ক হবে।”

আরো..