নিজস্ব প্রতিবেদক: রোজার ঈদ সামনে রেখে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরুর পঞ্চম দিনে টিকেটের চাহিদা আরও বেড়েছে। বিক্রি শুরুর প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে পশ্চিমাঞ্চলের সবগুলো ট্রেনের টিকেট।
বৃহস্পতিবার বিক্রির জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে ৬ এপ্রিল ঈদযাত্রার ট্রেনের টিকেট। সকালে দেওয়া হচ্ছে পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন রুটের ট্রেনের টিকেট। দুপুর ২টায় পুর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রুটের ট্রেনের টিকেট বিক্রির জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
আগামী ১১ এপ্রিল ঈদ হবে ধরে নিয়ে এবারের ঈদযাত্রার সূচি সাজিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। সে অনুযায়ী গত রোববার ৩ এপ্রিল ট্রেন যাত্রার টিকেট অনলাইনে উন্মুক্ত করা হয়। ৩০ মার্চ পর্যন্ত টিকেট বিক্রি চলবে, সেদিন বিক্রি হবে ৯ এপ্রিলের টিকেট।
বাংলাদেশ রেলওয়ে বলছে, চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ১০, ১১ ও ১২ এপ্রিলের টিকেট বিক্রি করা হবে।
টিকেট বিক্রি শুরুর প্রথম দিন রোববার টিকেটের চাহিদা কিছুটা কম ছিল। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে টিকেটের চাহিদা বাড়ে। সোমবার, মঙ্গলবার এবং বুধবার টিকেট বিক্রি হয়ে যায় আধা ঘণ্টার আগে। আর বৃহস্পতিবার টিকেট বিক্রি শুরুর প্রথম পাঁচ মিনিটেই কয়েকটি ট্রেনের টিকেট বিক্রি শেষ। ১০ মিনিট পর ওয়েবসাইট বা অ্যাপে ঢুকে কোনো টিকেট পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েসসাইট পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, সকাল ৮টায় অনলাইনে টিকেট বিক্রি শুরুর আগে রাজশাহী স্টেশনের জন্য ধূমকেতু এক্সপ্রেসে ৩৫৪টি, পদ্মা, বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনে ৬৩৬টি, সিল্কিসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে ২৮৮টি, মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনে ৭০টি এবং পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের ৬৬০টি আসন ছিল। ৮টা ৫ মিনিটের মধ্যে এসব ট্রেনের সব টিকেট বিক্রি হয়ে যায়।
দিনাজপুর স্টেশনের জন্য থাকা সব টিকেট সকাল ৮টা ৬ মিনিটের মধ্যে বিক্রি হয়ে যায়। বিক্রি শুরুর আগে এই স্টেশনের জন্য একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের ১৩১টি, দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের ১৬২টি, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের ২১৪টি আসন ছিল।
পার্বতীপুর স্টেশনের জন্য নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের ৯০টি, একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের ১০৩টি, চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের ১৫৮টি, দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের ৯৫টি কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের ৭৭টি, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের ১৪২টি টিকেট ছিল বিক্রি শুরুর আগে। বিক্রি শুরুর প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যে এসব ট্রেনের সব টিকেট বিক্রি হয়ে যায়।
রংপুর স্টেশনের জন্য রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের ১১২টি এবং কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের ১১৪টি টিকেট ছিল। বেলা ৮টা ৮মিনিটের মধ্যে টিকেটগুলো বিক্রি হয়ে যায়। ওই সময় পর্যন্ত ওই দুটি ট্রেনের অন্যান্য স্টেশনের জন্য বরাদ্দ টিকেটও আর বাকি ছিল না।
খুলনা স্টেশনের জন্য সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের ১০৬টি এবং চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের ১৮২টি টিকেট ছিল। বিক্রি শুরুর পর বেলা ৮টা ১০ মিনিটের মধ্যে সবগুলো টিকেট বিক্রি হয়ে যায়।
দেখা গেছে, পশ্চিমাঞ্চলের অন্যান্য রুটের ট্রেনগুলোর টিকেটও এই সময়ের মধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে।
গত ১৩ মার্চ রেলভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে রেলওয়ের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সরদার সাহাদাত আলী অগ্রিম টিকেট বিক্রির সূচি প্রকাশ করেন। রেলপথ মন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিমও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার পাওয়া যাবে ৮ এপ্রিলের ঈদযাত্রার টিকেট, আর শনিবার ৯ এপ্রিলের টিকেট বিক্রি হবে।
ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হবে ৩ এপ্রিল। ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকেট মিলবে।
এবারও ঈদযাত্রার কোনো টিকেট কাউন্টারে বিক্রি করা হচ্ছে না। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকেই শতভাগ টিকেট বিক্রি হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট, রেল সেবা অ্যাপ ও সহজ ডটকমের প্ল্যাটফর্ম থেকে টিকেট সংগ্রহ করা যাচ্ছে।
এবার ঈদের আগে সারাদেশের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী আন্তঃনগর ট্রেনের ৩৩ হাজার ৫০০টি টিকেট বিক্রি হবে।
ঈদ উপলক্ষে সারাদেশের বিভিন্ন রুটে আট জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানো হবে বলে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।