অনলাইন ডেস্ক: কথাতেই আছে, মাছে-ভাতে বাঙালি। অর্থাৎ, বাঙালির মাছ-ভাত ছাড়া হয় না। তবে মাছ থাকুক বা না থাকুক, ভাত কিন্তু ঠিকই নিয়মিত খাওয়া হয়। যেকোনো আয়োজনই হোক না কেন, যত খাবারের পদই থাকুক―সবশেষ ভাত থাকবেই। বাংলাদেশ কিংবা কলকাতা ছাড়াও বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে গেলেও বাঙালির ভাত লাগবেই।
প্রিয় এই খাবার নিয়মিত খাওয়ার ফলে শরীর সুস্থ-সবল থাকে। শরীরের বিভিন্ন পুষ্টির ঘাটতি মিটিয়ে আরও শক্তিশালী করে তোলে। শহর কিংবা গ্রামাঞ্চলে নিয়মিত ভাত খাওয়া হলেও সাধারণত দিনে দু’বার ভাত খাওয়া হয়। কিন্তু কেউ কেউ দিনে তিন বেলাই ভাত খেয়ে থাকেন। এ নিয়ে আবার অনেকে বলে থাকেন, তিনবার ভাত খাওয়া নাকি ভালো নয়।
এ নিয়ে যখন বিভিন্ন মাধ্যমে স্বঘোষিত বিশেষজ্ঞদের বিতর্কের শেষ নেই, সেই সময় বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শ্রাবণী মুখোপাধ্যায়। এবার তাহলে এ পুষ্টিবিদের ভাষ্য অনুযায়ী ভাত খাওয়া সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
পুষ্টিগুণে ভরপুর ভাত: ভাতকে বলা হয় কার্বের ভাণ্ডার। কার্বেকে পুড়িয়েই শরীর নিজের জন্য শক্তিলাভ করে। তাই কর্মজীবনে চাঞ্চল্য থাকার জন্য নিয়মিত ভাত খাওয়ার কথা বলা হয়। কার্ব ছাড়াও ভাতে অল্প পরিমাণে ফাইবার ও প্রোটিন রয়েছে। আবার জিঙ্ক, ভিটামিন বি, সেলেনিয়ামের মতো উপকারী উপাদানও রয়েছে ভাতে। এ জন্য পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে নিয়মিত ভাত খাওয়ার পরামর্শ এ পুষ্টিবিদের।
৩ বেলাই কি ভাত খাওয়া যায়: এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদ শ্রাবণী বলেন, ভাত খুবই উপকারী খাবার। এ জন্য কেউ চাইলে কোনো সন্দেহ ছাড়াই দিনে তিনবার করে ভাত খেতে পারেন। জাপানের অনেক মানুষই দিনে তিনবেলা ভাত খেয়ে থাকেন। এরপরও তারা সুস্থ জীবনযাপন করেন। এ জন্য বলা যায়, দিনে স্বাভাবিকভাবেই তিনবেলা ভাত খাওয়া যেতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে কয়েকটি নিয়ম মেনে চলা উচিত। নিয়মগুলো হচ্ছে―
অল্প খাওয়া: ক্ষুধা লাগলে অনেকেই একসঙ্গে অনেকগুলো ভাত খেয়ে থাকেন। এমনটা মোটেও ঠিক নয়। এই ভুলের কারণে একাধিক শারীরিক সমস্যা হতে পারে। যারা দিনে তিনবার ভাত খেতে চান, তাদের সকাল, দুপুর ও রাতে অল্প পরিমাণে খাওয়া উচিত। একইসঙ্গে ডায়েটে শাক-সবজি, মাছ-মাংস ও ডিম রাখতে পারেন। এতে উপকার পাওয়া যাবে।
এ ক্ষেত্রে ভাত খাওয়ার পরিমাণ আবার একদম কমিয়ে দেয়া যাবে না। তাতে আবার পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেবে। এ জন্য প্রয়োজনে কোনো পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে পারেন।
ব্রাউন রাইস হতে পারে ভরসা: সাদা ভাতে ফাইবার কিছুটা কম থাকে। এ জন্য এই ভাত খাওয়ার ফলে সুগার বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। আবার কিছুক্ষণ পরই ক্ষুধা লাগে। এ জন্য আপনার সামর্থ্য থাকলে সাদা চালের পরিবর্তে ব্রাউন রাইস কিনতে পারেন। এতে শরীরে ফাইবারের চাহিদা পূরণ হবে। একইসঙ্গে ভিটামিন ও খনিজের অভাব দূর হবে।
ডায়াবেটিসেও কি ভাত থাকবে: ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স পরিমাণে একটু বেশি। এ জন্য ডায়াবেটিসের রোগীদের ভাত খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হয়। কিন্তু ভাতের সঙ্গে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ শাক-সবজি খাওয়া হয়, তাহলে কোনো সমস্যার সম্ভাবনা থাকে না। এ জন্য সুগার রোগীদের ডায়েটেও পরিমাণমত ভাত রাখা হয়। তবে ডায়াবেটিসের রোগীদের চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্যতালিকা মেনে চলা উচিত।