ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে গঠিত খুলনা বিভাগীয় টাস্কফোর্স কমিটির ত্রৈমাসিক সভা বুধবার (২০/১২/২০২৪) সকাল ১১ টায় বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, খুলনা বিভাগ, খুলনা এর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনারের পক্ষে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব), মো: ফিরোজ শাহ। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্তিত ছিলেন ডা. মো: মনজুরুল মুরশিদ, পরিচালক (স্বাস্থ্য), খুলনা বিভাগ, খুলনা; মো: তবিবুর রহমান, পরিচালক, স্থানীয় সরকার, খুলনা বিভাগ, খুলনা এবং মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা, উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ)।
মো: ফিরোজ শাহ এর সঞ্চালনায় সভায় গত তিন মাসের খুলনা বিভাগের কার্যক্রমের অগ্রগতি উপস্থাপন করেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যরত সংগঠনের প্রতিনিধি, কাজী মোহাম্মদ হাসিবুল হক, প্রকল্প কর্মকর্তা, এইড ফাউন্ডেশন। উপস্থাপনা পরবর্তী মুক্ত আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন; মোঃ ইকবাল হোসেন, পরিচালক (উপসচিব), খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়, খুলনা; অনিন্দিতা রায়, পরিচালক, বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়, খুলনা; মোঃ রিয়াজুল কবির পিএসসি, পুলিশ সুপার (অপারেশনস্), রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়, বাংলাদেশ পুলিশ, খুলনা; সানজিদা বেগম, সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব), খুলনা সিটি কর্পোরেশন, খুলনা; এস এম নজরুল ইসলাম, সভাপতি, খুলনা প্রেস ক্লাব; এবং এডভোকেট মোঃ মাসুম বিল্লাহ, নির্বাহী পরিচালক, সিয়াম ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের প্রতিনিধি।
সভায় বক্তারা বলেন, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ও পরিচালক স্বাস্থ্য অফিস থেকে চিঠি প্রদানের পরে গত তিন মাসে ধূমপান ও তামাক জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে গঠিত জেলা ও উপজেলা ট্রাক্সফোর্স কমিটির মধ্যে চুয়াডাঙ্গা মাগুরা ও খুলনা জেলার কমিটির মিটিং সম্পন্ন হয়েছে। বিভাগের অন্যান্য উপজেলা ও জেলা কমিটির মিটিং এখনো সম্পন্ন হয়নি। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন ও প্রয়োগের শিথিলতার কারণে, তামাক কোম্পানিগুলো অবাধে তাদের বিজ্ঞাপন প্রচার করছে, যা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরে এনে খুব দ্রুত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি শাস্তি প্রদান করে দৃশ্যমান করতে হবে। তামাকের ক্ষতিকর বিষয় নিয়ে পত্রিকায় খবর প্রকাশের মাধ্যমে সাংবাদিকদের এগিয়ে আসতে হবে। সমাজের হতদরিদ্র শ্রেণীর মানুষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের পেছনে তারা অনেক টাকা ব্যয় করে থাকেন এই শ্রেণীর মানুষদেরকে বিরত করতে আগামীতে বিভিন্ন ভাতা প্রদানে অধুমপায়িদের অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে। খুলনা বিভাগীয় সরকারি অফিসগুলো বেশিরভাগই তামাকমুক্ত সাইনাএজ স্থাপন করা হয়েছে। খুলনা বিভাগের আওতধিন সকল জেলা ও উপজেলার অফিসগুলোতে তামাকমুক্ত সাইনএজ বাধ্যতামূলক ভাবে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে। খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকার আওতাধীন এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে যত্রতত্র তামাকের দোকান প্রায় ২৫০ টি অপসরন করা হয়েছে। পাশাপাশি পৌরসভা এলাকাগুলোতেও এ ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয় লাইসেন্স ব্যতীত থাকলে সেগুলো অপসারণ করে ফেলতে হবে। সিগারেট নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাইসেন্স বাস্তবায়নে জরুরিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং তামাক চাষে নিরসাহিত করতে বিকল্প চাষের ব্যবস্থা করতে হবে এবং কৃষকদের বিকল্প চাষে প্রণোদনা ব্যবস্থা করতে হবে। খুলনা বিভাগে তামাক জাতীয় দ্রব্য বিক্রেতাদের; যারা অবৈধভাবে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করছে তাদের একটি ডেটাবেজ করা হয়েছে উক্ত ডেটাবেজ অনুযায়ী মেট্রোপলিটন পুলিশ ও জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সাথে নিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে। খুলনা বিভাগের জেলা ও উপজেলা গুলোতে প্রচার-প্রচারণা ও সভা, সেমিনার অনুষ্ঠিত করতে; স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমূহ যেমন, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায় তামাক নিয়ন্ত্রণে বরাদ্দকৃত অর্থ তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রচার প্রচারণার কাজে ব্যয় করতে হবে পাশাপাশি লাইসেন্স বাস্তবায়ন করতে হবে। তামাক চাষ বন্ধের পাশাপাশি ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে। তামাকজাত দ্রব্য যেহেতু মাদক গ্রহণের প্রবেশদ্বার সেহেতু এটিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।