অনলাইন ডেস্ক: ছোট থেকে বড়, সব বয়সীদের পছন্দের খাবারের মধ্যে একটি ডিম। পুষ্টির ঘাটতি পূরণ বা অনাকাঙ্ক্ষিত বেড়ে যাওয়া স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে ডায়েটেও ডিম রাখা হয়। আবার বাসা-বাড়ির বাইরে দুপুরের লাঞ্চ বা আড্ডায় খিচুড়ি খাওয়ার সময়ও ডিম রাখা হয়। আর পছন্দের খাবার এই ডিম নিয়েই যত সন্দীহান প্রশ্ন।
অনেকে বলে থাকেন―ডিম খেলে নাকি গ্যাস ও অ্যাসিডিটির সমস্যা হয়। এ ধরনের সমস্যা থাকলে তা আরও প্রকট আকার ধারণ করে। কেউ কেউ আবার গ্যাসের সমস্যায় বেশি পরিমাণ ডিম খেতে নিষেধ করেন। কিন্তু আসলেই কি ডিম গ্যাস ও অ্যাসিডিটির সমস্যা করে? সম্প্রতি এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ শর্মিষ্ঠা রায় দত্ত। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
ডিমই সেরা: স্বল্প দামে ডিমের থেকে সেরা পুষ্টিকর অন্য কোনো খাবার আর খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। কেননা, এই প্রাণীজ খাবার হচ্ছে প্রোটিনের উৎস। আর ডিমের প্রোটিনকে সহজেই গ্রহণ করে নেয় শরীর। আবার এ থেকে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি১২, বিভাটিমন বি৫, ফসফরাস, সেলেনিয়ামের মতো একাধিক উপকারী ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে। যা স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে।
ডিম খেলে কি গ্যাস-অ্যাসিডিটি হয়: উপকারী এই খাবারের সঙ্গে গ্যাস ও অ্যাসিডিটির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে যাদের ক্রনিক গ্যাসট্রাইট্রিস রয়েছে, তাদের প্রতিদিন ডিম খেলে সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কেননা, মানুষের হজম ক্ষমতা স্বাভাবিকভাবেই দুর্বল থাকে। এর মধ্যে যদি প্রতিদিনই ডিমের মতো প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া হয়, তাহলে সমস্যা হতে পারে। তবে কোনো সুস্থ মানুষ ডিম খেলে গ্যাস-অ্যাসিডিটিতে ভোগেন না।
রান্নায় সতর্কতা: অনেকেই বিভিন্ন মসলা ও তেলে কষিয়ে তরকারি হিসেবে খেয়ে থাকেন ডিম। এ জন্য গ্যাস-অ্যাসিডিটির সমস্যা হয়। আবার নিয়মিত ডিমের অমলেট বা ডিমের পোচ খাওয়ার ফলেও নানা সমস্যা পিছু নিতে পারে। এ জন্য এভাবে ডিম না খাওয়াই ভালো। এতে পেটের সমস্যা হতে পারে। তবে ডিম ভালো ভাবে সিদ্ধ করে খাওয়া ভালো। এতে গ্যাস-অ্যাসিডিটি দূরে থাকবে।
দিনে কয়টি ডিম খাওয়া ভালো: যেকোনো সুস্থ মানুষ দিনে একটি করে ডিম খেতে পারেন। এতে কোনো সমস্যা হবে না। এমনকি সুগার, প্রেশার, কোলেস্টেরলের রোগীরাও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিদিন একটি করে ডিম খেতে পারেন। তবে যাদের ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, ইউরিক অ্যাসিড, হার্টের অসুখ রয়েছে, তাদের ডিম কম খেতে হবে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত। তা না হলে উপকারের বিপরীতে জটিলতা হতে পারে।
গ্যাস-অ্যাসিডিটি থেকে দূরে থাকতে করণীয়: তেল ও মসলা সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যাবে না। জাঙ্ক, প্রোসেসড ও ফাস্ট ফুড কম খেতে হবে। অ্যালকোহল, কোল্ড ড্রিংকস ও মিষ্টি এড়িয়ে চলতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। রকমারি ফল-মূল, শাক-সবজি খেতে হবে।