অনুকূলচন্দ্রের ১৩৬তম সিলেট বিভাগীয় জন্মমহোৎসবে মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ‘পবিত্র সিলেট নগর সকল ধর্ম-বর্ণ, সকল মত ও জাতিগোষ্ঠীর নিরাপদ বাসস্থান। এ সিলেট নগরে হিংসা-হানাহানি নেই, নেই সাম্প্রদায়িকতার স্থান। সিলেট হলো সম্প্রীতির নগর।’
মেয়র আরও বলেন, ‘ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের দিকনির্দেশনা আলোকিত ও মানবিক সমাজ গঠনের অনুপ্রেরণা।’ মেয়র আগামীতে আরও বড় পরিসরে ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের শুভ সিলেট বিভাগীয় জন্মমহোৎসব উদযাপনে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
শুক্রবার (৮ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টায় সিলেট নগরের পল্লবী আবাসিক এলাকা পনিটুলা লামারবাড়ি মাঠে যুগপুরুষোত্তম পরমপ্রেমময় শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের শুভ ১৩৬তম সিলেট বিভাগীয় জন্মমহোৎসব এবং ৩৬তম শ্রীহট্ট সৎসঙ্গ বিহারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে “মানবকল্যাণে শ্রীশ্রী ঠাকুরের অমিয় বাণী ও দিব্য জীবনাদর্শ” শীর্ষক ধর্মসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলেমিশে সিলেট সিটিকে আধুনিকায়ন করব। গ্রিন সিলেট, ক্লিন সিলেট ও স্মার্ট সিলেট গড়ে তুলবো।’অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের শুভ ১৩৬তম সিলেট বিভাগীয় জন্মমহোৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও শ্রীহট্ট সৎসঙ্গ বিহার, করেরপাড়া, সিলেটের ইনচার্জ অধ্যাপক শ্রী আশুতোষ দাস (এসপিআর)।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকর বক্তব্যে ভারত থেকে আগত ড. শ্রী কৃষ্ণ চন্দ্র দাস এসপিআর বলেন, ‘ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র আজীবন মানবতার জয়গান গেয়েছেন। সুন্দর, সুশৃক্সখল দেশ ও জাতি গঠনে ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ভূমিকা আমাদের চলার পথের পাথেয়। ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের অমিয় বাণী ও দিব্য জীবনাদর্শ লালন করলে ক্ষয়ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই। ঠাকুরের নির্দেশিত পথে চললে মানবিক আদর্শবান আলোকিত মানুষ হওয়া সম্ভব।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন- সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি জগদীশ চন্দ্র দাস, চ্যানেল এস টেলিভিশন ইউকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও প্রবাসী সমাজসেবী মাহি ফেরদৌস জলিল, সৎসঙ্গ বাংলাদেশের সহ-সম্পাদক শ্রী সুব্রত আদিত্য, ডা. শ্রী ললিত মোহন নাথ, শ্রী দীপক তালুকদার এসপিআর, শ্রী মনোজ কুমার দাস চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে ¯^াগত বক্তব্য রাখেন- ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের শুভ ১৩৬তম সিলেট বিভাগীয় জন্মমহোৎসব উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্রী নিখিলেশ দাস। সমস্ত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সৎসঙ্গী এডভোকেট শ্রী পংকজ দাস।শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ১৩৬তম সিলেট বিভাগীয় জন্মমহোৎসব অনুষ্ঠানে উৎসব স্মারকগ্রন্থ ‘ইস্টায়নী’-এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
জন্মমহোৎসব অনুষ্ঠানে সারাদিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে ছিল- ৮ মার্চ শুক্রবার ভোর ৪টা ৩১ মিনিটে নহবৎ, ভোর ৫টা ১ মিনিটে ঊষাকীর্ত্তন, ভোর ৫টা ৫৯ মিনিটে সমবেত বিনতী প্রার্থনা, নামজপ ও অমিয় গ্রন্থাদি পাঠ, সকাল ৭টা ১ মিনিটে স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় শ্রীশ্রী ঠাকুরের ভাবাদর্শে ভক্তিমূলক সঙ্গীতানুষ্ঠান, সকাল ৮টা ৩১ মিনিটে শ্রীশ্রী ঠাকুরের প্রতিকৃতিসহ নগর পরিক্রমা, সকাল ১০টা ৩১ মিনিটে মাতৃ সম্মেলন; আলোচ্য বিষয়: ‘আদর্শ পরিবার ও সমাজ গঠনে মায়েদের ভূমিকা’, সকাল ১১টা ৩১ মিনিটে বিনামূল্যে অ্যালোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা প্রদান, দুপুর ১২টা ৩১ মিনিটে হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ এবং সিলেট জেলার ও ভারতীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় শ্রীশ্রী ঠাকুরের ভাবাদর্শে সঙ্গীতানুষ্ঠান, দুপুর ১টা ১ মিনিটে ‘ভাণ্ডারা’-মহাপ্রসাদ বিতরণ করা শুরু হয়, সন্ধ্যা ৬টা ১ মিনিটে সান্ধ্যকালীন সমবেত বিনতী প্রার্থনা, নামজপ ও অমিয় গ্রন্থাদি পাঠ, সন্ধ্যা ৭টা ১ মিনিটে পুরুষোত্তম ধ্বনির মাধ্যমে উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠানে সারাদিনব্যাপী দীক্ষাদানের ব্যবস্থা করা হয়।
উৎসবে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, আবালবৃদ্ধবণিতার প্রাণবন্ত উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। -বিজ্ঞপ্তি