https://www.a1news24.com
৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৪:১৬

টিআর কাবিখার বরাদ্দ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা দুর্নীতি করে: ফারুক চৌধুরী

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : “টিআর কাবিখার বরাদ্দ নিয়ে প্রতিটি উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতারা দুর্নীতি করে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি। কর্ণফুলীতে আওয়ামী লীগের নেতারা এক টাকারও দুর্নীতি করে না। পাঁচ বছর আমি উপজেলায়, আমি দেখি।”

১৯ এপ্রিল (শুক্রবার) বিকেলে রিভারভিউ কমিউনিটি সেন্টারে কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) নিয়ে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী।

এমন একটি ৪ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের ভিডিও আমাদের হাতে এসেছে। ভিডিওতে তাঁকে আরও বলতে শোনা যায়, “এই টিআর কাবিখায় তো আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি ভোগ করে। কর্ণফুলীতে টিআর কাবিখার হান্ড্রেড পার্সেন্ট কাজ হয়। আমি বুকে হাত দিয়ে মন্ত্রী মহোদয়কে বলেছি কর্ণফুলীর আওয়ামী লীগ নেতারা টিআর কাবিখার ভাগ নেয় না। সব খানে চলে।”

এতে কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও একজন জনপ্রতিনিধির মুখে টিআর কাবিখা নিয়ে এমন মন্তব্যে বর্ধিত সভায় উপস্থিত অনেকেই হতভম্ব হয়ে যান।

খবর নিয়ে আরও জানা যায়, কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের এই বর্ধিত সভা বয়কট করেছে উপজেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে অংশ নেননি দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল ইসলাম চৌধুরী ও বড়উঠান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ দিদারুল আলমও।

এছাড়াও কমিটির ৭১ সদস্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রায় অর্ধেক সদস্য উপস্থিত হননি।

বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরী ও সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মো. সোলায়মান তালুকদার।

অংশ না নেওয়া তৃণমুল নেতারা গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন উপজেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কমিটি গঠন নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে দলের একটি অংশ এমন সিদ্ধান্ত নেয়।

এদিকে, যুবলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একটি অংশ দ্বিধা বিভক্ত হয়ে রয়েছেন। কেউ কারো ছায়াও মাড়াতে রাজি নন।

উপজেলা যুবলীগের নেতাকর্মীরা জানায়, গত এক বছর আগে পাঁচ ইউনিয়ন যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হয়েছে। কিন্তু এখনো কমিটি দিতে পারেনি আওয়ামী লীগের নেতাদের হস্তক্ষেপে।

ওদিকে, ছাত্রলীগের তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটি ৪ বছরেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এমনকি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কোন কর্মসূচিতে তাঁদেরকে জানানো হয় না।

ফলে আওয়ামী লীগের এই অঙ্গ সংগঠন গুলোর কমিটি গঠন না করায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে নেতাকর্মীরা। এতে নেতাকর্মীদের মতামত উপেক্ষা করে বর্ধিত সভা ডাকায় দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে।

বর্ধিত সভায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব হায়দার রনি, কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা এমএন ইসলাম, সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম টুকু, জসিম উদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ ইসমাইল, সেলিম উল্লাহ খান, দপ্তর সম্পাদক আমজাদ হোসাইন, প্রকাশনা সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার হাসমত আলী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রত্না দত্ত, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক নুর আহম্মদ, কোষাধ্যক্ষ আবদুল করিম ফোরকান, ভাইস চেয়ারম্যান আমির আহমদ, বড়উঠান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মন্নান খাঁন, চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ছৈয়দ আহমদ (বহিষ্কৃত), যুবলীগ নেতা মনির আহম্মদ মার্শালসহ (বহিষ্কৃত) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বর্ধিত সভায় অংশ নেয়নি কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাজী ছাবের আহম্মেদ চেয়ারম্যান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম হক, সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুর রহমান মিলন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী (নেভী), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ জালাল আহম্মদসহ একাধিক সম্পাদকীয় পদধারী নেতা ও বেশিরভাগ সদস্যরা অংশ নেননি।

আরো..