https://www.a1news24.com
১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১২:২৮

জুলধার ত্রাস: ভোল পাল্টে যুবলীগের আলী ওসমান এখন যুবদলের বড় নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর জুলধা ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণে থাকা আলী ওসমান সময়ের সঙ্গে ভোল পাল্টে যুবলীগ থেকে এখন যুবদলের নাম ভাঙাচ্ছেন।

একসময় স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এই আলী ওসমান, বর্তমানে বিএনপির একটি গ্রুপের ছত্রছায়ায় নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলে এলাকাবাসীর আতঙ্কে পরিণত হয়েছেন।

সম্প্রতি জুলধা ইউনিয়নে ডাকাতি, চাঁদাবাজি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনায় একাধিক অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। গত কয়েকদিন আগে তার নেতৃত্বে পিকআপ ভ্যান থেকে ৫ লাখ টাকার ডিজেল তেল ডাকাতির অভিযোগে কর্ণফুলী থানায় মামলা হয়েছে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, আলী ওসমান ও তার সহযোগীরা চালক নুরুজ্জামান ও সহকারী রমজান আলীকে মারধর করে তেল লুট করে নিয়ে যায়। যদিও থানায় মারধরের মামলা নেয়া হলেও, সরাসরি ডাকাতির অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়া নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

ক্ষমতার মোড় ঘুরিয়ে অপরাধের বিস্তার জানা গেছে, মো. আলী ওসমান (৪৫) একসময় কর্ণফুলী উপজেলার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং ফারুক চৌধুরীর বিশ্বস্ত ছিলেন।

তবে ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর তিনি বিএনপির এক নেতার সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়িয়ে নিজেকে জুলধা যুবদলের বড় নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেছেন। তার অপরাধ কার্যক্রম জুলধা ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের জীবনে চরম বিপত্তি তৈরি করেছে। রয়েছে নিরাপত্তাহীনতায়।

স্থানীয়রা জানান, কিশোর বয়স থেকেই অপরাধে যুক্ত আলী ওসমান সময়ের সঙ্গে তার কার্যক্রম আরও প্রসারিত করেছেন। নদীতে চোরাচালান, চাঁদাবাজি, এবং বিভিন্ন অপকর্মের মাধ্যমে তিনি বিপুল অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন। এলাকাবাসীর দাবি, ক্ষমতার দাপট ও অর্থের জোরে তিনি প্রশাসনের একটি অংশকে ম্যানেজ করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছেন।

জুলধার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আলী ওসমানের অত্যাচারে আমাদের এলাকায় থাকা দায় হয়ে পড়েছে। সে আওয়ামী লীগের সময়েও আমাদের জ্বালিয়ে খেয়েছে, এখন বিএনপির নামে আবার শুরু করেছে। আমরা তার থেকে মুক্তি চাই।

এছাড়া, আলী ওসমান শুধু নিজে নয়, তার আশ্রয়ে আরও একাধিক ব্যক্তি কর্ণফুলী এলাকায় একই ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে জানে আলম নামের আরেক ব্যক্তি আওয়ামী লীগের শাসনামলেও রাজনৈতিক সুযোগ নিয়েছিলেন এবং এখন উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক পরিচয়ে নানা অপকর্ম করছেন।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম বলেন, চাঁদাবাজি বা অপকর্মে যারা জড়িত, তাদের দলে কোনো জায়গা নেই। ইতোমধ্যে দলের ভেতর অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যদি কেউ বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অপরাধ করে, তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ও দলীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফ জানিয়েছেন, ওসমানকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তিনি বলেন, মামলা হয়েছে এবং অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

এলাকাবাসীর দাবি, জুলধার সাধারণ মানুষ একই ইউনিয়নের মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে আলী ওসমান এর অত্যাচারের অবসান চান। প্রশাসনের কাছে তাদের আহ্বান, অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক এবং এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা হোক।

আরো..