নিজস্ব প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় শহীদ নুর হেলি নামের এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতার ছাত্রদলে যোগদান নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে তিনি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মাত্র তিন বছর আগে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছিলেন তিনি। এই ঘটনা ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ছবি ভাইরাল হওয়ায় নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
জানা গেছে, শহীদ নুর হেলির পিতা মো. ইসমাইল কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চরলক্ষ্যা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। পারিবারিক রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই হয়তো তিনি এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
ভাইরাল হওয়া ছবিগুলোতে দেখা যায়, ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি শহীদ নুর টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। এছাড়া তাকে বিভিন্ন ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা গেছে। কিন্তু এখন তিনি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন।
সম্প্রতি কর্ণফুলীর চরলক্ষ্যা গ্রামের জামাল বাপের বাড়িতে একটি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সহায়তায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দক্ষিণ জেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম জসিম উদ্দিন বিষয়টি সামনে আনেন।
এ নিয়ে ফেসবুকে শহীদ নুরকে ঘিরে সমালোচনার ঝড় বইছে। এমডি বাবলু নামের এক ব্যক্তি ফেসবুকে তার ১১টি ছবি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখেন, “কর্ণফুলীতে আওয়ামী দোসরদের স্থান দেওয়া মানে জুলাই গণহত্যাকারীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা।”
কর্ণফুলীর কয়েকজন ছাত্রনেতা মনে করেন, শহীদ নুর হয়তো পারিবারিক নিরাপত্তার জন্য ছাত্রলীগ করতেন। তবে মনেপ্রাণে তিনি ছাত্রদলের আদর্শ ধারণ করতেন। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতায় থাকার সময় ঝুঁকি এড়াতে তিনি প্রকাশ্যে ছাত্রদল করতে পারেননি। ৫ আগস্টের পর পরিস্থিতি বদলে গেলে তিনি রাতারাতি ছাত্রদলের ইউনিয়ন কমিটিতে জায়গা করে নেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য মো. কামাল উদ্দিন ও হান্নান রহিম বলেন, “ছাত্রদল করার অধিকার সবার আছে। শহীদ নুর হয়তো একসময় ছাত্রলীগ করতেন, তবে হয়তো ছাত্রদলের আদর্শ তাকে আকৃষ্ট করেছে। এজন্য তিনি ছাত্রদলে যোগ দিয়েছেন।”
এ বিষয়ে মিডিয়ার কাছে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি শহীদ নুর। তবে এই ঘটনা নিয়ে স্থানীয়রা বিভক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ কেউ বিষয়টিকে স্বাভাবিক মনে করলেও অনেকে শহীদ নুরের অতীত রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। যদিও বর্তমানে ছাত্রলীগ একটি নিষিদ্ধ সংগঠন।