চলচ্চিত্রে ধূমপানের দৃশ্যের পরিবর্তে আগামী প্রজন্মের কাছে শিক্ষণীয় বার্তা পৌছাতে সমন্বিতভাবে কাজ করবে চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পী-কলা-কূশলী ও সংশ্লিষ্টরা। চলচ্চিত্রের সেন্সর ছাড়পত্রের সময় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেট বোর্ড। ২৪ অক্টোবর ২০২৪ দুপুরে তথ্য ভবনে বিএফসিবি’র সভাকক্ষ্যে মানস- মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড এর আয়োজিত ‘চলচ্চিত্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড সদস্যদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলা হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, চলচ্চিত্রে, পোস্টারে ও সকল প্রকার প্রচারণা উপকরণে ধূমপানের দৃশ্য রাখা যাবে না। গণসচেতনতা সৃষ্টিতে চলচ্চিত্রের শুরুতে, বিরতিতে এবং শেষে তামাক/ধূমপান বিরোধী তথ্যচিত্র দেখানো বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
মানস এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার বনিক, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গবেষক জাকির হোসেন রাজু, চলচ্চিত্র প্রযোজক জাহিদ হোসেন, চলচ্চিত্র সম্পাদক ইকবাল এহসানুল কবির, অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ ও নির্মাতা তাসমিয়া আফরিন মৌ, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস সিনিয়র টেকনিক্যাল এডভাইজার এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম প্রমুখ। প্রোগ্রামটি সঞ্চালনা করেন মানসের সিনিয়র প্রজেক্ট ও কমিউনিকেশন অফিসার মো. আবু রায়হান। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতি: সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান, চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন রোর্ড এর উপ-পরিচালক মোঃ মঈনউদ্দিন, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদোয়ান রনি, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক রফিকুল আনোয়ার রাসেল প্রমুখ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় মানসের প্রকল্প সমন্বয়কারী উম্মে জান্নাত বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতা এবং সিনেমা, নাটকে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের দৃশ্য প্রচার, প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইনে নিষিদ্ধ থাকলেও চলচ্চিত্রে, পোস্টার, থাম্বেল ও ট্রেলারে প্রধান চরিত্র দ্বারা ধূমপানের দৃশ্য দেখানো হচ্ছে। মানস এর গবেষণা তথ্য তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, ওটিটি প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত কন্টেন্টগুলোতে ধূমপানের দৃশ্য চলছে দেদারছে। খসড়া ওটিটি নীতিতে ধূমপান ও তামাক সেবনের দৃশ্য নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ তুলে ধরেন তিনি।
এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, সিগারেট কোম্পানিগুলো আমাদের কিশোরদের ধূমপানে প্ররোচিত করছে! উপরন্তু নাটক, সিনেমায় সেলিব্রেটিদের হাতে সিগারেট ধরিয়ে সমাজে উঠতি বয়সিদের ভূল বার্তা দেয়া হচ্ছে। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মানুষকে সুস্থ বিনোদন দিতে হবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় আইন প্রতিপালনে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
মানসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন নিশ্চিত করার জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই। এজন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন, যা তামাকমুক্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে। মাদক ও তামাকমুক্ত আগামী প্রজন্ম নিশ্চিতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
সভায় প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, এইড ফাউন্ডেশন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, নাটাব, ডাস, আভিয়ান সেন্টার, পাও ফাউন্ডেশন এর প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।