আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্কুলে বোমা হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। এতে জাতিসংঘের ৬ কর্মীসহ অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। এমন সময় ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালায় যখন মানুষ খাবারের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। হামলায় নারী ও শিশুরা টুকরো টুকরো হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী মধ্য গাজায় জাতিসংঘ-পরিচালিত আল-জাউনি স্কুলে বোমা হামলা চালালে এসব মানুষের হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ইসরায়েলের লাগাতার আগ্রাসনের কারণে হামলার শিকার স্কুলটিতে ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছিল এবং স্কুলটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ছয়জন আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপকসহ ইউএনআরডব্লিউএ কর্মী। আন্তর্জাতিক সংস্থাটি বলছে, গত ১১ মাস ধরে চলা যুদ্ধে এটি একদিনে তাদের কর্মীদের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা।
একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জাতিসংঘ পরিচালিত আল-জাউনি স্কুলে ইসরায়েলের হামলার পর উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পড়ে থাকা ইউএনআরডব্লিউএর লোগোসহ খাবারের ব্যাগ হিসেবে মৃতদেহ এবং আহত ব্যক্তিদের সরিয়ে নিচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার পর সর্বত্র হতাহতদের রক্তের গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। ময়লা-আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো এলাকা।
হামলায় ছয় শিশুকে হারানো এক ফিলিস্তিনি নারী জানান, ইসরায়েলি হামলায় তার ছয় শিশুরই মৃত্যু হয়েছে। ‘এই শিশুরা কি সন্ত্রাসী? কী অপরাধ, কী অপরাধ করেছে ওই নিষ্পাপ শিশুরা? আল্লাহ তাদের শাস্তি দিন। ইসরায়েলিরা আমাদের বাড়ি ধ্বংস করেছে। আমাদের লোকদের হত্যা করেছে। তারা ক্ষুধার্ত। নারীরা বিধবা এবং শিশুরা এতিম।’ আল জাজিরাকে বলেন তিনি।
গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে কয়েক লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি খান ইউনিসে পালিয়েছে।
১১ মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো ইসরায়েলি হামলায় ইতোমধ্যে ৪১ হাজার ৮৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। হামলার পর বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া অনেকেই নিখোঁজ হয়েছেন। তারা মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।