আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা চার মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের নির্বিচার এই হামলায় ভূখণ্ডটিতে ইতোমধ্যেই ২৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশুসহ নিরীহ বেসামরিক ফিলিস্তিনি। এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও স্বীকার করে নিয়েছেন যে, গাজায় নিহতদের মধ্যে ফিলিস্তিনি নিরীহ বেসামরিক নাগরিকের সংখ্যা ‘অনেক বেশি’।মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় নিহতদের মধ্যে ‘অনেক বেশি’ ফিলিস্তিনি নিরীহ বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সোমবার জানিয়েছেন। তাই এই মন্তব্য ফিলিস্তিনের রাফাহ শহরে ইসরায়েলের আসন্ন সামরিক অভিযানের ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করেছে।
হোয়াইট হাউসে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সাথে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘এই সংঘাতে নিহত ২৭ হাজার ফিলিস্তিনির মধ্যে অনেক নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন, যাদের মধ্যে হাজার হাজার শিশুও রয়েছে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, লাখ লাখ মানুষ খাদ্য, পানীয় বা অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনগুলো পূরণ করতে পারছে না এবং অনেক পরিবার কেবল একজনকে নয়, অনেক আত্মীয়কে হারিয়েছে। এটি হৃদয়বিদারক।’
বাইডেন আরও বলেন, ‘গাজায় হারিয়ে যাওয়া প্রতিটি নিরপরাধ জীবন এক একটি ট্র্যাজেডি। ইসরায়েলে হারিয়ে যাওয়া প্রতিটি নিরপরাধ জীবনও এক একটি ট্র্যাজেডি। ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের যারা নিহত হয়েছেন, আমরা তাদের উভয়ের জন্য এবং শোকার্ত পরিবারের সবার জন্য আমরা প্রার্থনা করি।’
তিনি বলেন, ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তির বিষয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই চুক্তি ‘অন্তত ছয় সপ্তাহ সময়ের জন্য গাজায় টেকসই ও সবার জন্য ভালো সময় নিয়ে আসবে। পরে এটি হয়তো আমরা আরও কিছু সময় স্থায়ী করতে পারি।’
পূর্ববর্তী মার্কিন আহ্বানের পুনর্ব্যক্ত করে বাইডেন বলেন, ‘রাফাহতে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখেরও বেশি লোকের নিরাপত্তা ও সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বাসযোগ্য কোনও পরিকল্পনা ছাড়া সেখানে বড় সামরিক অভিযান চালানো উচিত নয়।’
সহিংসতা থেকে বাঁচতে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কারণে রাফাহতে অনেক বাস্তুচ্যুত লোক রয়েছে উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, ‘তাদের রক্ষা করা দরকার।’ তার ভাষায়, ‘আমরাও শুরু থেকেই (নিজেদের অবস্থানে) স্পষ্ট ছিলাম। আমরা গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের যে কোনও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির বিরোধিতা করি।’