অনলাইন ডেস্ক: গ্রীষ্মের গরমে সবাই নাজেহাল। সূর্যের উত্তপ্ত দহনে শরীর প্রায় পুড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। আবার প্রচণ্ড ঘামও পড়ে। কিছুক্ষণ পরপর তৃষ্ণা পায়। এ সময় পানিশূন্যতার শঙ্কা কাটিয়ে উঠার জন্য প্রায় সবাই অধিক পরিমাণে পানি পান করেন। কেউ কেউ আবার শরীর ঠান্ডা করার জন্য ঠান্ডা পানি বা তরল খাবার খেয়ে থাকেন।
গরমে স্বাভাবিকভাবেই ঠান্ডা পানির কদর যেন বেড়ে যায়। এ সময় সবাই একটু পরপর ঠান্ডা পানি পান করেন। কিন্তু এই ঠান্ডা পানি পান নিয়েই যত জটিলতা। অনেকে বলে থাকে ঠান্ডা পানি পানে হার্টের ক্ষতি হয়ে থাকে। কিন্তু আসলেই কি তাই? এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতার ফর্টিস হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান ডা. শুভানন রায়। এবার তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
ঠান্ডা পানি পানে কি হার্টের ক্ষতি হয়: এ ব্যাপারে ডা. শুভানন রায় বলেন, এই ধারণার পেছনে বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। এ জন্য যারা গরমে ঠান্ডা পানি পান করতে চান, তারা পান করতে পারেন। এতে হার্টের কোনো ক্ষতি হবে না। হৃদগতির তারতাম্য হওয়ারও কোনো আশঙ্কা নেই। এ জন্য চিন্তার কারণ নেই। তবে গরমে ঠান্ডা পানি পানে হার্টের ক্ষতি না হলেও হঠাৎ করে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা থাকে। এ জন্য ঠান্ডা পানি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত।
হার্টের রোগীদের পরিমাণমত পানি পান: গরমে তৃষ্ণা বাড়ে। এ সময় বেশি বেশি পানি পান করতে হয়। তবে হার্টের পাম্পিংজনিত সমস্যায় থাকা ব্যক্তিরা হঠাৎ করেই পানি পানের পরিমাণ বাড়াবেন না। এমনটা করলে অকারণেই অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। এ জন্য পানি পানের পরিমাণ বাড়াতে চাইলে সবার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
জিম করার আগে ভাবুন: আজকাল ফিটনেস ফ্রিক মানুষও প্রায়ই জিমে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। এ জন্য জিম করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। পরামর্শ অনুযায়ী হার্টের চেকআপ করুন। হার্টে কোনো ব্লকেজ রয়েছে কিনা নিশ্চিত হয়ে নিন। তারপর পরামর্শ অনুযায়ী জিম করুন ও পানি পান করুন।
এছাড়া যারা নিয়মিত ঘাম ঝরাচ্ছেন বা পরিশ্রমের কাজ করছেন, তারা অবশ্যই বেশি বেশি পান করুন। এতে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সহজ হবে আপনার জন্য।
হার্ট ভালো রাখতে করণীয়: প্রচণ্ড গরমের সময় হার্ট ভালো রাখতে প্রথমেই ধূমপান ছাড়তে হবে। পাশাপাশি তেল, মশলা ও প্রসেসড ফুড এড়িয়ে চলতে হবে। এ সময় খাদ্যতালিকায় শাক-সবজি ও ফলের মতো উপকারী খাবার রাখতে হবে। দিনে ৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম করতে হবে। এছাড়া কোনো কারণে সমস্যা বেশি মনে হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হবে।