মোস্তাক আহমেদ, নিজস্ব প্রতিনিধি : মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে চান্স পেয়েছে সাতক্ষীরার কলারোয়ার ক্ষুদ্র সবজি দোকানদার আবু বক্কারের কন্যা নাদিরা খাতুন।নাদিরা ২০২৪ সালে উপজেলার বোয়ালিয়া মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রী কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পাশ করেন।
সম্প্রতি প্রকাশিত এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় নাদিরা খাতুন চাঁদপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। তার মেধাক্রম ৩৪১০।নাদিরা খাতুন উপজেলার কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের ক্ষুদ্র সবজি দোকানদার আবু বক্কার ও গৃহিণী শামসুন্নাহারের তৃতীয় কন্যা।
এদিকে মেয়ে মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় মেধাবী ওই ছাত্রীর পিতা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা ও দারিদ্রতার কারণে মেয়ের পড়ালেখার খরচ যোগাতে পারবেন কিনা সেই দুশ্চিন্তায় হিমশিম খাচ্ছেন । মেধাবী নাদিরা খাতুন জানান, তার লক্ষ্য অসহায়, দুস্থ ও অবহেলিত মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা।
নাদিরার পিতা ক্ষুদ্র সবজি দোকানদার আবু বক্কার বলেন, তার বাড়ির পাশে ছোট্ট একটি দোকানে বসে তরকারি বিক্রি করেন। এতে তার কোনরকম সংসার চলে। মেয়েরা মেধাবী হওয়ায় লেখাপড়া করাতে কখনো কার্পণ্য করেননি। তিনি আরও বলেন, তার তৃতীয় কন্যা নাদিরা এ বছর মেডিকেলে চান্স পেয়েছে, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। তবে দুশ্চিন্তায় আছি তার লেখাপড়ার খরচ জোগাতে পারবো কিনা।
তিনি সচ্ছল ব্যক্তিদের কাছে সম্ভব হলে সহযোগিতা কামনা করেছেন।বোয়ালিয়া মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ফারুক হোসেন জানান, তার কলেজের সদ্য প্রাক্তন ছাত্রী নাদিরা খাতুন অত্যন্ত মেধাবী। তার পিতা ও পরিবার আর্থিকভাবে অসচ্ছল হলেও শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের অবদান অত্যন্ত উজ্জল। নাদিরার পিতা একজন ক্ষুদ্র তরকারি সবজি দোকানদার। তার ভিটেবাড়ি ছাড়া তেমন কোনো জমি জায়গাও নাই। তবে তার চার মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করা চেষ্টা করছেন। অধ্যক্ষ আরও জানান, নাদিরা খাতুন চার বোনের তৃতীয়। তার বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে, দ্বিতীয় বোন যশোর এমএম কলেজে বোটানিকে অনার্সে অধ্যায়নরত ও ছোট বোন বোয়ালিয়া ইউনাইটেড হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী।
প্রসংগত; মেধাবী ছাত্রী নাদিরা খাতুন পিইসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি সকল পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলো। নাদিরা খাতুন পূর্ব বোয়ালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, বোয়ালিয়া ইউনাইটেড হাইস্কুল ও বোয়ালিয়া মুক্তিযোদ্ধা ডিগ্রী কলেজের ছাত্রী ছিলেন।