নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭২.৫১% শতাংশ বলে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এর আগে গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ খুলে দেওয়া হয়েছিল। আজ কারওয়ান বাজার র্যাম্প খুলে দেওয়া হচ্ছে। এটা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে দেশবাসীর জন্য ঈদ উপহার।
আজ সকালে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারওয়ান বাজার অংশে ডাউন র্যাম্প উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এই প্রকল্প এই বছরের মধ্যে শেষ হবে না। সামনের বছর শুরুতে পুরোটা খুলে দিতে পারবো। এরপর হাতিরঝিলের র্যাম্প খুলে দেওয়া হবে। সেইভাবেই কাজ চলছে।
ঢাকায় রমজান মাসে যানজট বাড়ে এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, রমজানে মানুষ শপিংমলে যায়। যানজট একটু থাকবেই। তবে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত তো যানজট হচ্ছে না। মানুষ কম সময়ে যাচ্ছে। এখন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আছে। আস্তে আস্তে ঠিক হবে। একসাথে সব হবে না তো।
আপনার মন্ত্রীত্বের ১২ বছরে লক্করঝক্কর বাস বন্ধ হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মন্ত্রী, আমি তো বাস ঠিক করবো না। এই বাস বন্ধ করলে আপনারা (সাংবাদিক) আগে রাস্তায় নামবেন। বলবেন জনগণকে কষ্ট দেয়। ১২ বছরে তো আমরা কম কাজ করিনি। পদ্মা সেতু হয়েছে, মেট্রোরেল হয়েছে। ১২ বছরের কথা এনে অপবাদ কেন দিচ্ছেন। এই মন্ত্রণালয়ের আওতায় কত কাজ হয়েছে। সব হবে একটু সময় দেন।বিআরটি প্রকল্প নিয়ে বলেন, এই একটা প্রকল্প দেরি হয়েছে। এটাও হয়ে যাবে।
ওবায়দুল কাদের জানান, ঢাকা শহরের যানজট নিরসনসহ ভ্রমণ সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ের লক্ষ্যে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি বাংলাদেশ সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিক দেশের বৃহত্তম প্রকল্প। প্রকল্পটি হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে শুরু হয়ে কুড়িল-বনানী-মহাখালী- তেজগাঁও-মগবাজার-মালিবাগ-খিলগাঁও-কমলাপুর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুতুবখালী) পর্যন্ত যাবে। প্রকল্পের মূল দৈর্ঘ্য ১৯.৭৩ কি.মি.। র্যাম্পসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬.৭৩ কি.মি.।
সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটি ঢাকা শহরের উত্তর-দক্ষিণ করিডোরের সড়ক পথের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। এ ছাড়াও প্রকল্পটি ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সাথে সংযুক্ত হলে ঢাকা ইপিজেড ও উত্তরবঙ্গের সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের যোগাযোগ সহজতর হবে। এতে করে ঢাকা শহরের যানজট নিরসনের পাশাপাশি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে।
তিনি বলেন, প্রকল্পের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ফাস্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি লিমিটেডের সাথে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পটি থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড (৫১%) এবং চায়না ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান শেনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনোমিক এ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ (৩৪%) ও সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেড (১৫%) এর যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ৮৯৪০ কোটি টাকা জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, যার ২৭% বাংলাদেশ সরকার বিজিএফ হিসেবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করবে। বর্তমানে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭২.৫১%।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রকল্পের হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ যান চলাচলের জন্য ৩ সেপ্টেম্বর উন্মুক্ত করা হয়েছে। এ অংশের মেইন লাইনের দৈর্ঘ্য-১১.৫ কি:মি: এবং র্যাম্পের দৈর্ঘ্য-১১.০ কি:মি:। র্যাম্পসহ মোট দৈর্ঘ্য-২২.৫ কি:মি:।
তিনি বলেন, বর্তমানে প্রকল্পের এফডিসি গেট সংলগ্ন ১.৫ কি.মি দীর্ঘ র্যাম্প যানবাহন চলাচলের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। উক্ত র্যাম্পসহ মোট ১৬টি র্যাম্প চালু হবে। মেইন লাইন ও র্যাম্পসহ মোট দৈর্ঘ্য- ২৪ কি.মি।