বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র, সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ ৮ মার্চ, শুক্রবার, বিকাল ৪ টায়, সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।জেলা শাখার আহবায়ক তামান্না আহমেদ এর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার আহবায়ক কমরেড উজ্জ্বল রায়,নারীমুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলা শাখার সদস্য নমিতা রায়,রুবাইয়াত আহমেদ,সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক বুশরা সোহাইল প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ আমেরিকার নিউইয়র্কের সুতা কারখানায় নারীশ্রমিকরা উপযুক্ত বেতন,কাজের উন্নত পরিবেশ ও দশ ঘন্টা কর্মদিবসের দাবিতে আন্দোলনে নামে।নারী শ্রমিকদের আন্দোলন দমন করার জন্য পুলিশ মিছিলের ওপর গুলি চালায়।আন্দোলন আরও জোরদার হয় এবং অন্যান্য দাবির সাথে ভোটাধিকারের দাবি ক্রমেই শক্তিশালী রূপ ধারণ করে। ধারাবাহিক আন্দোলন চলতে থাকে, নারী আন্দোলনের চেতনাকে ধরে রাখার জন্য ১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত কমিউনিস্টদের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়ার প্রস্তাব করেন ক্লারা জেৎকিন।এ প্রস্তাব অনুমোদন লাভ করে। নেতৃবৃন্দ বলেন নারী দিবসের সংগ্রামের ইতিহাস আজ ভূলিয়ে দেয়ার আয়োজন চলছে বিশ্বব্যাপী,বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। যে ৮ মার্চের সূচনা হয়েছিল কারখানায় শ্রমিকের হাত ধরে, যে শ্রমজীবী নারীরা ন্যায়সঙ্গত শ্রমঘন্টার দাবিতে, সমমজুরির দাবিতে, কাজের সুস্থ পরিবেশের দাবিতে লড়াই শুরু করেছিল, আজও নারীরা ঐসব অধিকার পায়নি। দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় বিশ্ব ব্যাংকের ‘নারী,ব্যবসা ও আইন- ২০২৪’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে কর্মক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীরা পুরুষের তিন ভাগের এক ভাগ আইনি অধিকার ভোগ করেন।দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পেছনে আছে শুধু আফগানিস্তান, অর্থাৎ নেপাল, ভূটান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ভারতের পেছনে বাংলাদেশের অবস্থান। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সর্বত্র নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে অথচ বিচার পাচ্ছে না। মানুষ হিসেবে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবি উঠেছে প্রায় ৩০০ বছর আগে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস অতিক্রম করছে ১১৪ বছর, অথচ আজও নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে নারী সমাজকে আন্দোলন করতে হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, নারীসমাজের মুক্তির জন্য চাই সমাজের মৌলিক পরিবর্তন উপযোগী রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক শক্তিশালী আন্দোলন। এ আন্দোলনে নারী পুরুষ নির্বিশেষে বিবেক সম্পন্ন সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।