ক্রীড়া ডেস্ক: টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়া দলকে টানলেন শন অ্যাবট। আট নম্বরে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে উপহার দিলেন চমৎকার এক ফিফটি। তাতে কোনোমতে আড়াইশ ছাড়াল অস্ট্রেলিয়া। পরে নিজের মূল কাজ বোলিংয়েও জ্বলে উঠলেন অ্যাবট। তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অনায়াসে হারাল স্বাগতিকরা।
সিডনিতে রবিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার জয় ৮৩ রানে। ২৫৮ রানের পুঁজি গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তারা থামিয়ে দিয়েছে ১৭৫ রানে। টানা দুই জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলল স্টিভেন স্মিথের দল। দেড়শর আগে ৬ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়া লড়ার মতো সংগ্রহ পায় অ্যাবটের সৌজন্যে। ওয়ানডেতে আগেও একটি ফিফটি করা এই ক্রিকেটার এবার করেন ৬৯ রান। ৪টি ছক্কা ও ১ চারে গড়া তার ৬৩ বলের ইনিংটি। পরে ৪০ রান দিয়ে ধরেন ৩ শিকার। এমন অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে তিনিই ম্যাচ সেরা।
সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের হালকা ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একশর আগে ৫ উইকেট নিয়ে তারা বেশ ভালোভাবেই চেপে ধরে স্বাগতিকদের। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড গড়া জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক অভিষেকে আভাস দেন ঝড়ের। কিন্তু টিকতে পারেননি তিনি। আলজারি জোসেফের করা প্রথম ওভারে টানা দুই বলে চার ও ছক্কা মারার পরের বলেই নেন বিদায়।
জশ ইংলিস, স্টিভেন স্মিথ যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি ক্যামেরন গ্রিন ও মার্নাস লাবুশেন। ৯১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কাঁপতে থাকা দলকে কিছুক্ষণ টানেন ম্যাথু শর্ট ও অ্যারন হার্ডি। তাদের ৫১ রানের জুটি ভাঙে হার্ডির বিদায়ে। কয়েক ওভার পর ফিরে যান ৪১ রান করা শর্টও। এরপর অভিষিক্ত উইল সাদারল্যান্ডকে নিয়ে ৫৭ রানের জুটি গড়ে দলের রান দুইশ পার করেন অ্যাবট। শেষের আগের ওভারে আউট হন ৫৪ বলে ফিফটি করা এই ক্রিকেটার।
রান তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটা হয় বেশ বাজে। ৩৪ রানে হারিয়ে ফেলে তারা টপ অর্ডার তিন ব্যাটসম্যানকে। ৫৩ রানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন শেই হোপ ও কেসি কার্টি। কার্টি কিছুটা দ্রুত রান বাড়ালেও হোপ ছিলেন ভীষণ সাবধানী। তবুও আগে ফেরেন হোপই। ক্যারিবিয়ান অধিনায়ককে চমৎকার এক ইনসুইং ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন জশ হেইজেলউড।
দারুণ খেলতে থাকা কার্টি কট বিহাইন্ড হন অ্যাবটের বলে। রোমারিও শেফার্ডকে টিকতে দেননি সাদারল্যান্ড। বেশ কিছুক্ষণ ধরে এক প্রান্ত আগলে রাখা চেইসকে ফিরিয়ে দেন অ্যাবট। লক্ষ্য তাড়ায় একবারও জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি সফরকারীরা। আগামী মঙ্গলবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৫৮/৯ (ম্যাকগার্ক ১০, ইংলিস ৯, গ্রিন ৩৩, স্মিথ ৫, লাবুশেন ২৬, শর্ট ৪১, হার্ডি ২৬, অ্যাবট ৬৯, সাদারল্যান্ড ১৮, জ্যাম্পা ৮*, হেইজেলউড ৪*; জোসেফ ৯-০-৭৪-২, ফোর্ড ৯-১-৩২-১, শেফার্ড ৮-০-৫০-২, টমাস ৪-০-৩৩-১, মোটি ১০-০-২৮-৩, চেইস ১০-০-৪০-০)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৩.৩ ওভারে ১৭৫ (আথানেজ ১১, গ্রিভস ৮, অটলি ৮, হোপ ২৯, কার্টি ৪০, চেইস ২৫, শেফার্ড ৬, ফোর্ড ৭, জোসেফ ১৯, মোটি ৭*, টমাস ৭; হেইজলউড ৮-০-৪৩-৩, হার্ডি ৮-২-২৭-১, অ্যাবট ১০-০-৪০-৩, সাদারল্যান্ড ৮-০-২৮-২, জ্যাম্পা ৯.৩-০-৩১-১)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৮৩ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: শন অ্যাবট
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া